সাঙ্গাকারারা আসলে সিরিয়াস

ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ বলেই হয়তো সকাল থেকে স্টেডিয়ামের টিকিট কাউন্টারে বেশ ভিড়। টিকিটের চড়া দাম নিয়ে অনেকেই অসন্তুষ্ট হলেও গ্যালারিমুখী দর্শকদের লাইনটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লম্বা হতে লাগল। অতি উত্সাহী কেউ কেউ উঁকি দিতে চাইলেন ইনডোরের দিকে। কিন্তু চাইলেই কি আর সব দেখা যায়! শ্রীলঙ্কার অনুশীলন নিরাপত্তার এমন ঘেরাটোপেই বন্দী যে, সাধারণ দর্শকের সেটির কাছাকাছি যাওয়ারই উপায় নেই।
প্রথম দুই ম্যাচে জিতে ফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত। শ্রীলঙ্কা দলকে দেখে অবশ্য তা বোঝার উপায় নেই। পরদিন (আজ) লিগ পর্যায়ের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম ম্যাচেও প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। সকাল ১০টার মধ্যেই তারা ইনডোরে। অনুশীলন চলল প্রায় দুপুর ১টা পর্যন্ত। তবে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন হয়নি বলে এ ম্যাচ নিয়ে তাদের চিন্তাভাবনা জানা গেল না। অনুশীলন শেষে ইনডোর ছাড়ার সময় যা-ও একটু কুমার সাঙ্গাকারার মুখোমুখি হওয়া গেল, সংবাদ সম্মেলন ছাড়া কোনো কথাই বলবেন না বলে ঘোষণা করে দিলেন তিনি, ‘প্রেস কনফারেন্সে যত ইচ্ছা প্রশ্ন করুন। প্রেস কনফারেন্সের বাইরে কিছু বলব না।’
সাবেক অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনে দলে নতুন অতিথি। ম্যানেজার ব্রেন্ডন কুরুপ্পু যতই মাহেলাকে ম্যাচ-ফিট বলুন, কাল নেটে ব্যাট করতে নামার আগে সাবেক অধিনায়ক দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকলেন ফিজিওর স্ট্রেচারে। ইনডোর ছাড়ার সময় অবশ্য নিজেও বলে গেলেন, ‘আমি ফিট।’ কিন্তু ওই পর্যন্তই। এই সিরিজের সবচেয়ে আলোচিত ‘শিশির’ নিয়ে কথা বলতে চাইলেই ‘কোড অব কন্ডাক্টের’ তালা মেরে দিলেন মুখে। শুধু বললেন, ‘দেশে টিভিতে খেলা দেখেছি। সন্ধ্যার পর এখানে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, সে ব্যাপারে তাই আমি ভালো বলতে পারব না।’ এই সুযোগে অবশ্য শ্রীলঙ্কার ‘কোড অব কন্ডাক্ট’ নিয়ে ছোটখাটো একটা লেকচার শোনা গেল সাবেক অধিনায়কের মুখে, ‘কথা বলতে আমার কখনোই সমস্যা নেই। কিন্তু আমাদের বোর্ড এবং টিম ম্যানেজমেন্ট এখন খেলোয়াড়দের কথা বলার ব্যাপারে খুবই কঠোর। চাইলেও এখন আমরা প্রেস কনফারেন্সের বাইরে কথা বলতে পারি না। দলের কেউই তা বলবে না।’
জয়াবর্ধনের কথাটা পুরোপুরি ঠিক হলো না। থিলিনা কান্দাম্বি ঠিকই কথা বললেন। এবারের বাংলাদেশ সফর নাকি বেশ উপভোগ্যই মনে হচ্ছে তাঁর কাছে। কারণ? ‘দল ভালো খেললে সবই ভালো লাগে।’ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে কান্দাম্বির এটাই প্রথম বাংলাদেশে আসা। এর আগে ঢাকায় এসেছিলেন আবাহনীর হয়ে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ খেলতে। সেটা মনে করিয়ে দিতেই বললেন, ‘তিনটা ম্যাচ মনে হয় খেলেছিলাম...। আবাহনী এবারও যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু জাতীয় দলের সঙ্গে থাকায় আসতে পারিনি।’ তবে কান্দাম্বি নিজেই জানিয়েছেন, আইপিএলে সুযোগ না হলে শারজার পিসিএলে খেলবেন। দলের নামটা বলতে না পারলেও জানালেন, ‘সম্ভবত তামিম আর আমি একই দলে খেলব।’
কান্দাম্বি যখন পিসিএলে খেলার কথাও ভাবতে পারছেন, তিলকরত্নে দিলশানের জন্য তখন অনিশ্চিত এই সিরিজের বাকি ম্যাচগুলোও। কাল ইনডোরে ফিজিওর চিকিত্সা নিতে নিতেই কোচ ট্রেভর বেলিসকে বলছিলেন, ‘আমি মনে হয় (কাল) খেলতে পারব।’ কিন্তু বেলিস যে ঝুঁকি নিতে রাজি নন, সেটি বোঝা গেল তাঁর কথায়, ‘দরকার নেই। পুরো ফিট হয়ে একবারে ফাইনালেই খেলো।’ দিলশানকে ছাড়াই যেখানে ভারতকে হারানো গেছে, বাংলাদেশের বিপক্ষে তাঁকে নিয়ে টানাহেঁচড়ার কী দরকার!

No comments

Powered by Blogger.