তথ্য অধিকার সম্পর্কে জনসচেতনতার অভাব রয়েছে -বিশেষ সাক্ষাত্কার by এম আজিজুর রহমান

প্রধান তথ্য কমিশনার এম আজিজুর রহমানের জন্ম ১৯৪৩ সালে ফরিদপুরের মাদারীপুরে। ১৯৬১ সালে তিনি ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। একই বছর তিনি তত্কালীন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৮৫ সালে যুক্তরাজ্যের কুইন ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার থেকে জনপ্রশাসন ও পল্লি উন্নয়ন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০১ সালে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে অবসর নেন। তিনি এ বছরের এপ্রিল মাসে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ পাস এবং তারপর তিন সদস্যবিশিষ্ট তথ্য কমিশন গঠিত হলে প্রথম প্রধান তথ্য কমিশনার হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন জুলাই মাসে। আজিজুর রহমান আজিজ নামে কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস ও নাটক লেখেন তিনি।
সাক্ষাত্কার নিয়েছেন মশিউল আলম

প্রথম আলোতথ্য অধিকার আইন পাস হয়েছে, তথ্য কমিশন গঠিত হয়েছে, আপনারা তিনজন কমিশনার নিয়মিত অফিস করছেন। কিন্তু নাগরিকেরা এই আইন কতটা ব্যবহার করছে, সে বিষয়ে তেমন কোনো সাড়া লক্ষ করা যাচ্ছে না। আপনারা কী লক্ষ করছেন?
এম আজিজুর রহমান  আমরা এ লক্ষ্যেই আসলে কাজ করছি। কিন্তু লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে যেসব প্রারম্ভিক কাজ সম্পন্ন করতে হয়, সেগুলো আমরা প্রথম গুছিয়ে নিচ্ছি।
প্রথম আলোযেমন?
এম আজিজুর রহমান  যেমন, এখন আমরা একটি অস্থায়ী অফিসে কাজ করছি। এ অফিসের পরিসর খুবই সামান্য। এই স্বল্প পরিসর অফিসে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে ততোধিক স্বল্পসংখ্যক জনবল নিয়ে। অবশ্য ইতিমধ্যে আমরা আরও একটি বৃহত্ পরিসরে অফিস স্থাপনের কাজ হাতে নিয়েছি। সুখের কথা, এ মাসের মধ্যেই আমরা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তৃতীয় তলায় আট হাজার বর্গফুটের একটি স্থানে এ অফিস স্থানান্তর করতে সক্ষম হব। পাশাপাশি আমরা সরকারের কাছে তথ্য কমিশনের নিজস্ব ভবন নির্মাণের উদ্দেশ্যে এক বিঘা জায়গার জন্য আবেদন করেছি। সরকারের গণপূর্ত মন্ত্রণালয় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে একটি সমপরিমাণ প্লট বরাদ্দের আশ্বাস দিয়েছে এবং সে লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে।
প্রথম আলোতথ্য কমিশনের সাংগঠনিক কাঠামোর কী অবস্থা?
এম আজিজুর রহমান  তথ্য কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করার পরই সাংগঠনিক কাঠামো কী হবে, এর কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায়, আইনে বা অন্য কোথাও এর উল্লেখ নেই বিধায় আমরা নিজেরাই একটি সাংগঠনিক কাঠামো ও লজিস্টিকসের প্রয়োজনীয় খসড়া তৈরি করেছি। সরকার তা অনুমোদন করেছে। তবে এর জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় রেখে কমিশন কাজ করে যাচ্ছে; বিশেষ করে, তাদের বসার জায়গার অভাব রয়েছে বলে এখনই জনবল নিয়োগ করা হচ্ছে না। নতুন কার্যালয়ে যাওয়ার পর জনবল নিয়োগ করা হবে। ইতিমধ্যে সরকার তথ্য কমিশনের চাহিদা মোতাবেক একজন সচিব, একজন উপসচিব, একজন উপপরিচালক, একজন সহকারী অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং একজন অফিস সুপার কমিশনের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এর বাইরে প্রধান তথ্য কমিশনারের প্রাধিকারবলে প্রাপ্ত জনবল কমিশনের কাজ করে যাচ্ছে।
প্রথম আলো এ মুহূর্তে তথ্য কমিশনের মোট জনবল কত?
এম আজিজুর রহমান  ৭৭ জন।
প্রথম আলোকমিশনের মূল কাজ শুরু করতে তো একটি বিধিমালা প্রয়োজন। কিছুদিন আগে আপনার কাছেই জেনেছিলাম, বিধিমালা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এখন কী অবস্থা?
এম আজিজুর রহমান  বিধিমালা অনুমোদিত হয়ে গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু কারিগরি ত্রুটির কারণে এটি এখনো প্রচার করা হয়নি।
প্রথম আলোপ্রবিধান তৈরি করা হয়েছে?
এম আজিজুর রহমান  প্রবিধানমালার চূড়ান্ত খসড়া আজই মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর চেষ্টা চলছে।
প্রথম আলোসরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তরসহ সব পর্যায়ের সব কর্তৃপক্ষের তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ করার কথা, যাঁদের কাছে নাগরিকেরা তথ্য চেয়ে আবেদন করবে। তথ্য কর্মকর্তা বা তথ্য দেওয়ার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কতটা অগ্রগতি হলো?
এম আজিজুর রহমান  কৃষি ও তথ্য মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চসংখ্যক তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে এবং কমিশনকে জানিয়েছে। অন্য মন্ত্রণালয়গুলোর তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ এখনো শেষ হয়নি।
প্রথম আলোমানুষ তথ্য চেয়ে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করছে কি না?
এম আজিজুর রহমান  এই পাঁচ মাসে আমাদের কাছে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি আবেদন এসেছে।
প্রথম আলোআপনাদের কাছে? তথ্য চেয়ে আবেদন করেছে তথ্য কমিশনের কাছে?
এম আজিজুর রহমান  হ্যাঁ। যেসব আবেদন করার কথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তাদের কাছে, কিন্তু কয়েক ব্যক্তি সেগুলো করেছেন আমাদের কাছে।
প্রথম আলোতার মানে, তাঁরা জানেন না তথ্য কমিশনের কাজ কী?
এম আজিজুর রহমান  এ থেকে এটাই প্রতীয়মান হচ্ছে, তথ্য কমিশনের কাজ যে তথ্য দেওয়া নয়, এ বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে সম্যক ধারণার অভাব আছে। এই অভাব দূর করতেই কমিশন ১৪টি জেলা ও উপজেলায় গিয়ে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে বসে জন-অবহিতকরণ সভার আয়োজন করেছে। সেসব সভায় তথ্য অধিকার আইনের যথাযথ ব্যাখ্যা, জনগণের কী করণীয়, কর্মকর্তাদের কী করণীয় ইত্যাদি বিষয়ে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। অন্যান্য জেলা-উপজেলায়ও এ ধরনের জন-অবহিতকরণ সভার আয়োজন করা হচ্ছে। এটি তথ্য কমিশন কর্মসূচির একটি চলমান প্রক্রিয়া।
প্রথম আলোকমিশনের কি আর্থিক কোনো অসুবিধা আছে?
এম আজিজুর রহমান  না। প্রথম দুই মাসে যদিও কোনো অর্থ বরাদ্দ ছিল না, কিন্তু এর পর থেকেই কমিশন যখন যে পরিমাণ অর্থ চেয়েছে, থোক বরাদ্দ হিসেবে তা পেয়েছে।
প্রথম আলোএ পর্যন্ত আপনারা কত টাকা পেয়েছেন?
এম আজিজুর রহমান  চলতি অর্থবছরের জন্য ১১ কোটি ৭১ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে, এ পর্যন্ত পাঁচ কোটি পেয়েছি, বাকিটাও সঠিক সময়ে পেয়ে যাব।
প্রথম আলোকী কাজে অর্থ ব্যয় হচ্ছে মূলত?
এম আজিজুর রহমান  কমিশনের ৭৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা, যানবাহন, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ইত্যাদি ক্রয়...।
প্রথম আলোজন-অবহিতকরণের কাজটি তথ্য কমিশনের একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে আর কার কী করার আছে বলে আপনি মনে করেন?
এম আজিজুর রহমান  এটা প্রথমত সরকার করবে। সরকার সে কাজটি শুরু করে দিয়েছে। তথ্য কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের আগে থেকেই তথ্য মন্ত্রণালয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সম্পর্কে ডেটাবেজ তৈরির কাজ শুরু করেছে এবং জন-অবহিতকরণের কাজটিও তারা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটও তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে প্রশিক্ষণার্থীদের অবহিত করছে, যাঁরা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে গিয়ে এই আইন সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করতে পারেন। এমনকি তথ্য কমিশনের পক্ষ থেকে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করে অনুরোধ করা হয়েছে, স্কুল-কলেজে শিক্ষকেরা ক্লাস শুরুর আগে যেন শিক্ষার্থীদের সামনে তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে বক্তব্য দেন। ভবিষ্যতে তথ্য অধিকার আইনকে সমাজবিজ্ঞানের একটি অংশের অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না, আমরা সে বিষয়েও বিবেচনা করতে বলেছি।
প্রথম আলোতথ্য অধিকার আইনের একটি ধারায় লেখা আছে, কর্তৃপক্ষগুলো নিজ উদ্যোগেও তথ্য প্রকাশের উদ্যোগ নেবে। আপনারা কি জানেন, কর্তৃপক্ষগুলো সেটা করছে কি না?
এম আজিজুর রহমান  হ্যাঁ, অনেক জায়গায় এটা শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সার্বক্ষণিক তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাঁরা অন্যান্য অফিসের সঙ্গেও কম্পিউটারের মাধ্যমে সংযুক্ত। তাঁরা সিটিজেনস চার্টার সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করছেন। পুলিশ সুপারের অফিসগুলোয়ও আমরা তথ্যকেন্দ্র খুলতে বলেছি।
প্রথম আলোভূমি অফিস, আদালত, দুদক—এসব সংস্থা থেকে তথ্য পাওয়ার বিষয়গুলো কি আগের চেয়ে সহজ হয়েছে?
এম আজিজুর রহমান  জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যে তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে, তা ভূমি অফিসসহ জেলার সব সরকারি দপ্তরের সঙ্গে সংযুক্ত আছে। একই জায়গা থেকে সব দপ্তরের তথ্য পাওয়া সম্ভব। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ওয়েবসাইট আছে, ওয়েবসাইটেও অনেক তথ্য পাওয়া যায়। আমরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, সব মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে বলেছি, তারা যেন শিগগিরই নিজ নিজ তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ করে। এ বিষয়ে আমরা তাগিদ দিয়ে চলেছি। সেই সঙ্গে আমরা বলেছি, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যাঁদের নিয়োগ করা হবে তাঁদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, ই-মেইল ঠিকানা ইত্যাদি তথ্য সম্পর্কে আমাদের অবহিত করার জন্য। অনেকগুলো পেয়েছি, দুদকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম এখনো পাইনি।
প্রথম আলো দুদককে কি আপনারা নিজ উদ্যোগে তথ্য প্রকাশের জন্য বলেছেন?
এম আজিজুর রহমান  আমরা তো দুদককে বলব না, আমরা বলব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে। আমরা সরকারি কর্মকমিশনকে বলব না, বলব সংস্থাপন মন্ত্রণালয়কে। একইভাবে আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলব না, বলব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে। অর্থাত্ স্বাধীন কমিশনগুলো সরকারের যে যে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যুক্ত, তাদের বলব।
প্রথম আলোকোনো কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো তথ্য চাওয়া হয়নি?
এম আজিজুর রহমান  আমরা অনানুষ্ঠানিকভাবে জানতে পেরেছি, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে নবীনগর থেকে এক ব্যক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে সব দপ্তর-অধিদপ্তরের কে কবে, কখন সিলেকশন গ্রেড পেয়েছেন, পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকে পারসোনাল অফিসার হয়েছেন এবং কারা বাদ পড়েছেন, তা জানতে চেয়েছেন। কিন্তু সেই আবেদনপত্রে প্রেরকের নাম-ঠিকানা নেই।
প্রথম আলোভারতে তথ্য অধিকার আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে সে আইন ব্যবহারে ব্যাপক সাড়া পড়েছিল। সে দেশের তথ্য কমিশনে আপিল আবেদনের পাহাড় জমে উঠেছিল তিন মাসের মধ্যে। ভারতীয় প্রধান তথ্য কমিশনার ওজাহাত হাবিবুল্লাহ দায়িত্ব নেওয়ার মাস ছয়েক পর ঢাকা সফরে এলে তাঁর কাছে জানতে পেরেছিলাম, তথ্য কমিশন হাজার হাজার আপিলের শুনানি করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে তথ্য অধিকার আইন কার্যকর হওয়ার পর পাঁচ মাস পেরিয়ে গেছে। আপনাদের কাছে আপিল আসা পরের কথা, লোকজন তথ্য চেয়ে আবেদন করছে, এমন খবরও তো পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
এম আজিজুর রহমান  ভারতে তথ্য অধিকার আইনের দাবিতে বেশ কয়েক বছর ধরে অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে। বর্তমান তথ্য অধিকার আইনের আগে তারা একটি আইন করেছিল ফ্রিড অব ইনফরমেশন অ্যাক্ট নামে। আইনটিতে অনেক ঘাটতি থাকায় তা বাতিল করে নতুনভাবে তথ্য অধিকার আইন নামে একটি আইনের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। এ নিয়ে ভারতজুড়েই বেশ একটা আলোড়ন চলেছে বেশ কয়েক বছর ধরে। এভাবে এ বিষয়ে জনগণের মধ্যে তথ্য অধিকারের বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া ভারতে তথ্য অধিকার আইনের দাবিটা প্রথমে উঠে আসে একদম তৃণমূল পর্যায় থেকে। আমাদের দেশে সে রকম ঘটেনি। এ দেশে তথ্য অধিকারের বিষয়টি সীমাবদ্ধ ছিল মূলত রাজধানীর মধ্যেই। আর এটা নিয়ে বলেছেন প্রধানত শিক্ষিত শহুরে নাগরিক সমাজ: সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, উন্নয়নকর্মীরা। সে কারণেই তথ্য অধিকার আইন বা সামগ্রিকভাবে তথ্য অধিকার সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সম্যক ধারণার অভাব রয়েছে। আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে এ অভাব দূর করার লক্ষ্যে। জনগণ যখন জানতে পারবে, ক্ষমতায়িত হওয়ার কী অপূর্ব এক আইনি হাতিয়ার তারা পেয়েছে, তখন তারা অবশ্যই আর বসে থাকবে না। তথ্য অধিকার আইনের ব্যাপক ব্যবহার তখন অবশ্যই শুরু হবে।
প্রথম আলোআমরা শেষ করছি। কোনো প্রসঙ্গ বাকি থেকে গেল কি?
এম আজিজুর রহমান  এটুকু যোগ করতে চাই যে তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকেই তথ্যমন্ত্রী ও তথ্যসচিব যেভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন, আমাদের সহযোগিতা দিচ্ছেন, তাতে কমিশন বিশ্বাস করে যে ঈপ্সিত সময়ের আগেই কমিশনের কর্মতত্পরতা দেশব্যাপী পরিচালনা করতে সক্ষম হবে। এ ছাড়া কমিশন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্কালে তথ্য কমিশনকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠার যে অভিপ্রায় তাঁরা উভয়ে ব্যক্ত করেছেন, তাতে কমিশন আশান্বিত যে দেশ থেকে দুর্নীতি ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে, রাষ্ট্র ও সরকারের সব কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার জন্য আইন অনুযায়ী তথ্য কমিশন পরিচালিত হতে সক্ষম হবে। ফলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে, সাধারণ নাগরিকদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে গণতন্ত্র সুসংহত হবে।
প্রথম আলো  আপনাকে ধন্যবাদ।
এম আজিজুর রহমান  আপনাকেও ধন্যবাদ। আবার আসবেন। তথ্য কমিশনের দরজা সবার জন্য সব সময় খোলা।

No comments

Powered by Blogger.