সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে আগের ধারণার চেয়ে দ্বিগুণ -নতুন গবেষণা প্রতিবেদন

  চলমান শতাব্দীর শেষ নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১ দশমিক ৪ মিটার বা চার ফুটেরও বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে। এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। কোপেনহেগেনে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো। ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) ২০০৭ সালের চতুর্থ মূল্যায়ন প্রতিবেদনে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির যে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, নতুন এই গবেষণায় তার দ্বিগুণ উচ্চতা বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে।
সায়েন্টিফিক কমিটি অন অ্যান্টার্কটিক রিসার্চের (এসসিএআর) ১০০ জন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী এই গবেষণা পরিচালনা করেন। দক্ষিণ মেরুর ওপর বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব নিয়ে এই প্রথম সমন্বিত কোনো গবেষণা চালানো হলো। আইপিসিসির ২০০৭ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০৯৯ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১৮ সেন্টিমিটার থেকে ৫৯ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। কিন্তু পরে গ্রিনল্যান্ড ও দক্ষিণ মেরুর বরফ গলনের ওপর পরিচালিত গবেষণার পর আশঙ্কা বেড়ে গেছে যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এর চেয়েও বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে।
এসসিএআরের নির্বাহী পরিচালক কলিন সামারহেইস লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দক্ষিণ মেরুর পশ্চিমাঞ্চলের বরফ দ্রুত গলছে। গলনের এই হার ২১০০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১ দশমিক ৪ মিটার পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।
নতুন এই গবেষণার পূর্বাভাস যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে মালদ্বীপের মতো নিচু দ্বীপগুলোর অধিকাংশ এলাকাই সমুদ্রে তলিয়ে যেতে পারে। এর আগে পরিচালিত গবেষণার ওপর ভিত্তি করে জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক প্যানেল এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যে হারে বাড়ছে, তাতে ২১০০ সালের মধ্যে মালদ্বীপ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
নতুন এই গবেষণায় যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, তাতে ভারতের উপকূলবর্তী শহর মুম্বাই, চেন্নাই এবং কলকাতার নিম্নাঞ্চলীয় এলাকার জন্য হুমকি অর্থপূর্ণভাবে বেড়ে গেল। এসব এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাবে।
১৮৭০ সাল থেকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বছরে গড়ে ১ দশমিক ৭ মিলিমিটার করে বেড়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক দশকগুলোতে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে প্রতিবছর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে বছরে ২ দশমিক ৫ মিলিমিটার করে।

No comments

Powered by Blogger.