বাজারদর নিয়ে ভাবনা -নিবিড়ভাবে দেশি-বিদেশি বাজার পর্যবেক্ষণ জরুরি

নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারদর আবারও জনমনে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমনের ভরা মৌসুমে চালের মূল্যবৃদ্ধি, ডালের চড়া দর, ভোজ্যতেলের উচ্চমূল্য—কোনোটিই প্রত্যাশিত নয়। ঠিক কী কারণে এসব পণ্যের দাম বাড়ছে, তাও স্পষ্ট নয়। সরবরাহজনিত কোনো ঘাটতি আছে কি না, তাও জানা যাচ্ছে না। প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নানা ধরনের অজুহাত দেখানো হচ্ছে এই দাম বাড়ানোর বিষয়ে। তাতে জনসাধারণের কোনো উপকার হচ্ছে না। উপকার হওয়ার কথাও নয়। কারণ, বাড়তি দামেই তাদের শেষ পর্যন্ত এসব পণ্য কিনতে হচ্ছে।
চাহিদা ও জোগানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা দেখা দিলে তা অনিবার্যভাবে দামের ওপর প্রভাব ফেলে। সমস্যা হলো, বাংলাদেশে এখনো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলোর চাহিদা সম্পর্কে খুব ভালো ও হালনাগাদ কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই। একইভাবে জোগান ও মজুদ-পরিস্থিতি সম্পর্কেও হালনাগাদ তথ্য নেই সরকারের কাছে। ফলে এক ধরনের তথ্যঘাটতির মধ্যে থাকতে হয় নীতিনির্ধারকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে। আর এটা অনেক সময় অসাধু ব্যবসায়ী-বিক্রেতারা কাজে লাগিয়ে থাকেন। ফলে দাম বেড়ে যায় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে। এটা নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব সরকারেরই। চাহিদা-জোগান, উত্পাদন-মজুদ ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত হালনাগাদ করাসহ নিবিড়ভাবে দেশি-বিদেশি বাজার পর্যবেক্ষণ করার প্রয়োজনীয়তা অনেক দিন ধরেই অনুভূত হচ্ছে। কাজটি সরকার যত দ্রুত করবে তত মঙ্গল।
এদিকে প্রথম আলোর আরেকটি খবরে জানা যায়, বাণিজ্যমন্ত্রী ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে মালয়েশিয়া থেকে পামতেল আমদানির কথা ঘোষণা করেছেন। এ ধরনের ঘোষণা দেওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল বলে মনে হয় না। কারণ, গত এক বছরে চিনি, পেঁয়াজ, ডালসহ বিভিন্ন পণ্য টিসিবি আমদানি করবে বলে ঘোষণা দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তার বেশির ভাগই বাস্তবায়িত হয়নি। আর এর সুযোগ নিয়েছেন ব্যবসায়ী-আমদানিকারকেরা। এতে কিছুটা কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে, দাম বেড়েছে। তাই বাজারদর নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী যত কম কথা বলেন ততই ভালো।

No comments

Powered by Blogger.