পুরান ঢাকার সিক্কাটুলি পুকুর -সংরক্ষণ ও দখলমুক্ত করতে পদক্ষেপ নিন

বর্ষা মৌসুমে ঢাকা মহানগরের জলাবদ্ধতার পরিস্থিতি দিন দিন স্থায়ী রূপ নিচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যায়। ভারী বর্ষণ হলে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়। এর কারণ, বৃষ্টির পর পানি বের হতে না পারা। রাজধানীতে যেসংখ্যক জলাধার দরকার, তা না থাকায় এমনটি ঘটে। অথচ একসময় ঢাকায় অগুনতি পুকুর- জলাশয় ছিল, প্রায় ৫০টির মতো খাল ছিল। এগুলোর অধিকাংশ অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও ভূমি-আগ্রাসনের শিকার হয়েছে। ঢাকায় জলাবদ্ধতা ও পরিবেশের বিপর্যয় যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা থেকে পরিত্রাণ পেতে দ্রুত অবশিষ্ট জলাধারগুলো সংরক্ষণ ও দখলমুক্ত করা প্রয়োজন।
গত শনিবারের প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি সংবাদ থেকে জানা যায়, পুরান ঢাকার সিক্কাটুলির ঐতিহ্যবাহী পুকুরটি রক্ষার জন্য নগরবাসী সরব হয়েছেন। গত শুক্রবার পরিবেশবাদী ও স্থানীয় লোকজন পুকুরটি ভরাট বন্ধের দাবি জানিয়ে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা দূর করা, আগুন লাগলে পানির উত্স হিসেবে এবং স্থানীয় লোকজনের নানা প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পুকুরটির অবদান রয়েছে। মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেছেন, একটি চক্র এ পুকুরটির মালিকানা দাবি করে সেখানে ভবন নির্মাণের চক্রান্ত করছে, যা জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০-এর লঙ্ঘন। শতবর্ষী সেই পুকুরের পাড়ে দাঁড়িয়ে তাঁরা এ কাজে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
জলাশয় সংরক্ষণে বিদ্যমান আইনের বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অনুমতি না নিয়ে কোনো জলাশয় ভরাট করা যায় না। আইনটির কঠোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা দরকার। আমরা বহু জলাশয় হারিয়ে যেতে দেখেছি, আর নয়। আশার কথা, পরিবেশবাদীদের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন এ বিষয়ে সচেতন হচ্ছে। আমাদের প্রত্যাশা, জনগণের দাবির প্রতিফলন ঘটতে দেখা যাবে কর্তৃপক্ষের কাজে।

No comments

Powered by Blogger.