চাঁদে ‘প্রচুর পানির’ সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা

চাঁদে প্রচুর পানির সন্ধান পেয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। এই আবিষ্কার মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে বড় ধরনের একটি সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (নাসা) এক বিবৃতিতে গত শুক্রবার বলা হয়, এই আবিষ্কার চাঁদ সম্পর্কে আমাদের গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।
বার্তা সংস্থা জানায়, গত মাসে নাসা চাঁদে দুটি মহাকাশযান পাঠায়। একটি রকেট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ক্যাবিউস নামের একটি বিশাল গহ্বরে ঘণ্টায় নয় হাজার কিলোমিটার গতিতে আছড়ে পড়ে। এর ফলে এই গহ্বর থেকে বিভিন্ন পদার্থের একটি শিখা বের হয়ে আসে। চার মিনিট পর এই দৃশ্য ধারণ করে ক্যামেরাসজ্জিত অপর একটি মহাকাশযান। ক্যামেরায় ধারণ করা উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা চাঁদে পানির অস্তিত্বের ব্যাপারে নিশ্চিত হন।
নাসার এই মিশনের প্রধান বিজ্ঞানী অ্যান্থনি কোলাপ্রেট বলেন, ‘অল্প পানি নয়, আমরা প্রচুর পানির সন্ধান পেয়েছি।’ অপর এক বিজ্ঞানী বলেন, দুই গ্যালন ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট এক ডজন বালতিতে যতটা পানি ধরে, আমরা তত পানির খোঁজ পেয়েছি।’
ওয়াশিংটনে নাসা সদর দপ্তরের চন্দ্র গবেষণার প্রধান মাইকেল ওয়ারগো বলেন, ‘আমরা সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশীর রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করছি। আরও বৃহত্ পরিসরে দেখলে সৌরজগতের রহস্য ভেদ করছি।’
চাঁদে আগেই পানি পাওয়া গিয়েছিল, তবে বিজ্ঞানীরা আশা করছিলেন চাঁদের স্থায়ী ছায়াবৃত অংশের গহ্বরগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পানির অস্তিত্ব পাওয়া যাবে। ক্যাবিউস নামের ওই গহ্বর থেকে বের হওয়া পদার্থ পরীক্ষা করে তাঁরা সেই প্রমাণই পেলেন।
সন্ধান পাওয়া এই পানি যদি কোটি কোটি বছরের পুরোনো হয়, তাহলে এর মাধ্যমে সৌরজগতের বিবর্তন সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই পানি মহাকাশ অভিযাত্রীদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হতে পারে এবং পানের কাজেও লাগতে পারে।
লুনার ক্রেটার অবজারভেশন অ্যান্ড সেন্সিং স্যাটেলাইট (এলসিআরওএসএস) নামের নাসার এই মিশনের প্রধান বিজ্ঞানী অ্যান্থনি কোলাপ্রেট বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। চাঁদে পানির অস্তিত্ব ও এর বিস্তৃতি এবং অন্যান্য পদার্থ নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। তবে এটা বলা যায় যে, ক্যাবিউসে পানি আছে।’
কোলাপ্রেট আরও বলেন, এলসিআরওএসএসের উপাত্ত থেকে পূর্ণ ধারণা পেতে আরও কিছু সময় লাগতে পারে। তবে এই উপাত্ত সমৃদ্ধ।

No comments

Powered by Blogger.