মেগরাহির মুক্তির বিষয়ে আলোচনায় বাণিজ্যিক স্বার্থ ছিল: জ্যাক স্ট্র

যুক্তরাজ্যের বিচারমন্ত্রী জ্যাক স্ট্র স্বীকার করেছেন, লকারবি বোমা হামলার একমাত্র সাজা পাওয়া আসামি আবদুল বাসেত আলী আল-মেগরাহির মুক্তির বিষয়ে আলোচনায় দেশের বাণিজ্যিক স্বার্থ বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছিল। বিশেষ করে বিখ্যাত তেল কোম্পানি বিপির সঙ্গে লিবিয়ার বাণিজ্য চুক্তিতে মেগরাহির মুক্তির বিষয়টির বড় ভূমিকা ছিল। ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি বিস্ফোরক এ মন্তব্য করেন। সাক্ষাত্কারটি গতকাল শনিবার প্রকাশিত হয়েছে।
লিবীয় নাগরিক মেগরাহির মুক্তির পর অভিযোগ ওঠে, লিবিয়ার তেল পাওয়ার জন্যই মেগরাহিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ওই মুক্তি-প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য স্কটল্যান্ড সরকারকে প্রভাবিত করেছে। যুক্তরাজ্য সরকার বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
স্কটল্যান্ডের লকারবি শহরের আকাশে মার্কিন প্যানঅ্যাম বিমানে ১৯৮৮ সালের ২১ ডিসেম্বরে চালানো ওই বোমা হামলার ঘটনায় একমাত্র সাজা পাওয়া আসামি মেগরাহি ক্যান্সারে আক্রান্ত। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে গত ২০ আগস্ট মেগরাহিকে মুক্তি দেয় স্কটল্যান্ডের সরকার। ওই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ তোলে, লিবিয়ার তেল পাওয়ার জন্যই লকারবি হামলার আসামিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্য সরকার ওই মুক্তি-প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছে। যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে বহু লেখালেখি হয়েছে। এ অবস্থায় যুক্তরাজ্যের বিচারমন্ত্রী এই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন।
এত দিন ওই অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য বললেও এক প্রশ্নের জবাবে জ্যাক স্ট্র ডেইলি টেলিগ্রাফকে বলেন, ‘লিবিয়ার সঙ্গে ওই সময় আমরা বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়তে তত্পর ছিলাম। দুইপক্ষের আলোচনায় তাই মেগরাহির মুক্তির প্রসঙ্গটি একটি বড় ভূমিকা রেখেছিল।’
লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুসা কুসা গতকাল ব্রিটেনের দ্য টাইমস পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেন, মেগরাহির মুক্তির ব্যাপারে যুক্তরাজ্য সরকারকে দোষারোপ করা ন্যায়সংগত হবে না। কারণ মেগরাহির মুক্তির সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির কোনো যোগসাজশ নেই। তিনি এও বলেন, ‘আমরা যদি দরকষাকষি করতে চাইতাম, তাহলে বহু আগেই তা করতে পারতাম।’
গত শুক্রবার বিপি কর্তৃপক্ষ জানায়, লিবিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির আলোচনায় গতি আনতে সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল। তবে মেগরাহির মুক্তির জন্য ওই সময় কোনো ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হয়নি।
প্যান অ্যাম ১০৩ নম্বর ফ্লাইটে বোমা হামলার ওই ঘটনায় আল-মেগরাহিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। আট বছর সাজা ভোগ করার পর তিনি মুক্তি পেয়ে লিবিয়া ফেরেন।

No comments

Powered by Blogger.