ভূমির জন্য ভারতের অনুরোধ: বাংলাদেশ সরকার বেকায়দায় by মীর মোস্তাফিজুর রহমান

আগরতলা বিমানবন্দর আধুনিকায়নের জন্য ভারতকে কিছু জমি দিতে অনুরোধ দৃশ্যত বাংলাদেশ সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা এই পত্রিকাকে বলেন, আমরা গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি।

ওই কর্মকর্তার মতে, ভারত জমি চায় সামান্যই। সীমানা প্রাচীর ও ল্যান্ডিং লাইটের জন্য বাংলাদেশের কাছে প্রায় ১৫০ বর্গ গজ জমি চেয়েছে ভারত।

তিনি বলেন, ভারতের কাছ থেকে প্রস্তাবটি পাওয়ার পর আমরা বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছি। তারা এ ধরনের অনুরোধের ব্যাপারে আপত্তি উত্থাপন করলেও প্রস্তাবটির কারিগরি দিকগুলো জানতে চেয়েছে।

গত কয়েক দিনে কয়েকজন মন্ত্রী ও শীর্ষ আমলাদের কাছে জানতে চাইলে এ ধরনের প্রস্তাবের ব্যাপারে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছেন।

দৃশ্যত বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে মোমেন বলেন, তার মন্ত্রণালয় ভারতের পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো প্রস্তাব পায়নি।

বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ও প্রস্তাবটি গ্রহণ করার ব্যাপারে তাদের অনাগ্রহের কথা জানিয়েছে।

ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ মহারাজা বীর বিক্রম বিমানবন্দরটি সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা করছে। এটি ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ও বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে।

উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা মিডিয়াকে সম্প্রতি জানিয়েছেন, বুধবার নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় ভারত-বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপিত হতে পারে।

তবে নয়া দিল্লিতে বেসামরিক বিমান মন্ত্রণলয়ের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ভারতকে বাংলাদেশ জানিয়েছে যে তারা প্রস্তাবটি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে।

ভারতের নিউজ ম্যাগাজিন স্বরাজ্যকে দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, এমনকি এখনো বিদ্যমান রানওয়েতে নামার সময় বিমান বাংলাদেশের ভূমির ওপর দিয়ে ল্যান্ড করে। প্রধান ও দ্বিতীয় উভয় রানওয়েই আন্তর্জাতিক সীমান্তের জিরো লাইন থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে। এ কারণেই বাংলাদেশের কাছ থেকে ভূমির প্রয়োজন।

ওই আমলা বলেন, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ও সংশোধিত প্রস্তাব শিগগিরই বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘ মেয়াদে জমিটি ইজারা নিতে চাই। তাছাড়া বাংলাদেশের নাগরিকরাও যাতে বিমানবন্দরটি ব্যবহার করতে পারে, সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

সাবেক ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং ২০১৮ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ সফরের সময় প্রস্তাবটি দেন। বাংলাদেশ এ ব্যাপারে বিস্তারিত পরিকল্পনা দিতে বলেছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের এক সাবেক মন্ত্রী বলেন, ভারতের কাছে জমি হস্তান্তর করা হলে দেশে ভয়ঙ্কর ক্ষোভের সৃষ্টি হবে।

No comments

Powered by Blogger.