গাজায় আবারও ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ নিহত ৩ আহত ২৫০

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার পশ্চিম সীমান্তে পুনরায় বিক্ষোভ করেছে ফিলিস্তিনিরা। ইসরাইলি সেনারা বিক্ষোভকারীদের ওপর উন্মুক্তভাবে গুলি চালানোর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও শুক্রবার সেখানে বিক্ষোভ করেছে তারা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ২৫০ জন। অঞ্চলটিতে প্রথম বিক্ষোভ হয়, ৩০শে মার্চ। ইসরাইল-বিরোধী ওই বিক্ষোভে অংশ নেয় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। বিক্ষোভকারীদের ওপর খোলা গুলি চালায় ইসরাইলি সেনারা। এতে নিহত হন ১৬ ফিলিস্তিনি। আহত হন ১৬ হাজারেরও বেশি। ২০১৪ সালের পর গাজায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন ছিল ওই শুক্রবার। এছাড়া, পুরো সপ্তাহজুড়ে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে আরো কয়েকজন ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী। গাজা’র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২১ জন হয়েছে। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা ও বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
খবরে বলা হয়, ভূমি দিবস উপলক্ষে ৩০শে মার্চ, শুক্রবার শুরু হওয়া বিক্ষোভের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে গতকালও গাজার ইসরাইল সংলগ্ন পশ্চিম সীমান্তে বিক্ষোভ করেছে ফিলিস্তিনিরা। রাজনৈতিক বিশ্লেষক, মোহসেন আবু রামাদান বলেন, ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করা ইসরাইলের নতুন-পুরনো নীতিমালা। বিশেষ করে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর উগ্র-ডানপন্থি সরকারের আমলে। তিনি বলেন, আমার ধারণা যে, ইসরাইল তাদের এই উত্রাসন নীতিমালার অংশ হিসেবে, যত বেশি সম্ভব ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করা অব্যাহত রাখবে। যাতে করে তাদেরকে বিক্ষোভে অংশ নিতে নিরুৎসাহিত করা যায়। এদিকে, ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিগদর লিয়েবারম্যান জানান যে, ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের সামলানোর ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর নিয়ম পরিবর্তনের কোনো ইচ্ছাই নেই। তিনি বলেন, যদি উস্কানি থাকে, তাহলে গত সপ্তাহের মতো কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে। ইসরাইলি কর্মকর্তারা, ফিলিস্তিনিদের এই বিক্ষোভের পেছনে হামাস জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ এনেছে। তারা বলেছে, এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ ও শিশুদের ব্যবহার করে চালানো হচ্ছে ও তাদেরকে সীমান্তের নিকটে বিপদের সম্মুখীন করে তুলছে। তবে বিক্ষোভের আয়োজনকারীরা এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। ‘গ্রেট মার্চ অফ রিটার্ন’- শীর্ষক এই বিক্ষোভের মুখপাত্র আসাদ আবু শারেখ বলেন, এই পদযাত্রার আয়োজক হচ্ছেন, শরণার্থী, চিকিৎসক, আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ফিলিস্তিনি বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, বেসামরিক নাগরিক সমাজ সংগঠন ও ফিলিস্তিনি পরিবার। তিনি আরো বলেন, এই বিক্ষোভের পেছনে হামাস রয়েছে, ইসরাইলের এমন দাবির পেছনে উদ্দেশ্য হচ্ছে পদযাত্রাটির ধারণায় নাশকতা নিয়ে আসার একটি পদ্ধতি। যাতে করে তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর তাদের আক্রমণ ন্যায্য প্রমাণ করতে পারে। রামাদান জানান, ইসরাইল বিক্ষোভকারীদের একটি সামরিক সংঘাতে জড়ানোর চেষ্টা করছে।

No comments

Powered by Blogger.