ক্রিমিয়াকে কখনোই ফেরত দিতে হবে না: পুতিন

আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে বুধবার
ক্রিমিয়া সফর করেন ভ্লাদিমির পুতিন। ক্রিমিয়াবাসী
এবারই প্রথমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট
নির্বাচনে ভোট দেবেন। ছবি: রয়টার্স
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি, যে কারণে ক্রিমিয়াকে ইউক্রেনের কাছে ফেরত দিতে হবে। আর তা কোনো দিনই সম্ভব নয়। লাখো জনতার ভাগ্য আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ রাশিয়ার জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক আন্দ্রেই কান্দ্রাশোভের পরিচালনায় নির্মিত নতুন একটি তথ্যচিত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন এ কথা বলেন। ২০১৪ সালের মার্চে এক গণভোটের মাধ্যমে কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী ক্রিমিয়া রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়। ওই ভোটে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে বেশির ভাগ ভোট পড়ে। মস্কো বরাবরই বলে আসছে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের গঠনতন্ত্র মেনে নিয়েই রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়া যুক্ত হয়। রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপের একীভূত হওয়াকে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে পশ্চিমা জোট। অন্যদিকে, ইউক্রেনের পার্লামেন্ট উপদ্বীপের পদমর্যাদা পরিবর্তনের হুমকি দিচ্ছে। রুশ সাংবাদিক আন্দ্রেই কান্দ্রাশোভ এর আগেও ক্রিমিয়া নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন। ২০১৫ সালে তাঁর নির্মিত ‘ক্রিমিয়া-ঘরে ফিরে আসা’ ছবিটি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। এবার নতুন ছবি নিয়ে আবারও তিনি মুখোমুখি হয়েছেন পুতিনের। আন্দ্রেই কান্দ্রাশোভ পুতিনের কাছে জানতে চান, ‘যদি এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়, যে কারণে আপনি ক্রিমিয়া ও সেভাস্তোপোলকে কি ফেরত দেবেন?’
পুতিন বলেন, ‘আপনি খেপেছেন? ওই ধরনের কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবে না।’ পুতিন বলেন, ‘যেসব ঘটনা ক্রিমিয়াকে মস্কোর সঙ্গে যুক্ত করেছে, মস্কো চাইলে ওই ঘটনায় নিজেকে জড়াতে পারত। তা ছাড়া দ্বীপের লাখ লাখ মানুষের ভাগ্য আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, যাদের ওপর আজ বিভিন্ন দেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।’ মস্কো টাইমসের খবরে জানানো হয়, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে বুধবার ক্রিমিয়া সফর করেন ভ্লাদিমির পুতিন। ক্রিমিয়ার মানুষ এবারই প্রথমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবেন। রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ার যুক্ত হওয়ার চার বছর পূর্তি উপলক্ষে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেন তিনি। এর আগে রাশিয়া ও ক্রিমিয়ার মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতে নির্মাণাধীন সেতু ও সিমফেরোপোল বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ঘুরে দেখেন পুতিন। স্থানীয় লোকজন ওই সেতুকে ‘পুতিন সেতু’ হিসেবে নামকরণ করেছে। ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সেতু ইউরোপের দীর্ঘতম সেতু হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.