বৃথা এ যাত্রীছাউনি, নকশায় বদল

বনানী থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে ১২টি আধুনিক যাত্রীছাউনি। এর মধ্যে তিনটির নির্মাণকাজ কাজ শেষ। কিন্তু যাত্রীছাউনির ছাদ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ওপরে হওয়ায় ছাউনিতে ছায়া পাওয়া যায় না। রক্ষা মেলে না বৃষ্টির ঝাপটা থেকেও। তাই যাত্রীছাউনিগুলো ব্যবহারে আগ্রহ নেই পথচারীদের। এই পরিস্থিতিতে ছাউনিগুলোর নকশায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) তত্ত্বাবধানে ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপের অর্থায়নে এসব আধুনিক যাত্রীছাউনি নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব যাত্রীছাউনিতে মুঠোফোন চার্জ ও রিচার্জের ব্যবস্থা থাকবে। নামাজ আদায়ের ব্যবস্থাও থাকবে সেখানে। থাকবে এটিএম বুথ ও ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার। ডিজিটাল বোর্ডে থাকবে বাসসংক্রান্ত নির্দেশনা। সাতটিতে থাকবে আধুনিক শৌচাগার। সওজের দেওয়া তথ্য অনুসারে, মাটি থেকে ছাউনির উচ্চতা ১৫ ফুট। আর ওপরে ছাউনির প্রস্থ ছিল ১০ ফুট। এখন প্রয়োজন অনুসারে প্রস্থ বাড়ানো হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, এমইএস বাসস্ট্যান্ডে নির্মিত নতুন যাত্রীছাউনিতে কোনো যাত্রী নেই। কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনের ছাউনিতেও একই দৃশ্য দেখা যায়। অথচ এমইএস বাসস্ট্যান্ডে নতুন যাত্রীছাউনির পাশে থাকা পুরোনো যাত্রীছাউনিতে যাত্রীদের ভিড়।
সেখানে অপেক্ষমাণ যাত্রী মো. সোবহান হোসেন বলেন, ছায়ার জন্য যাত্রীছাউনি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নতুন এই যাত্রীছাউনিতে ছায়া নেই। তাই ছাউনির নিচে যাত্রীও নেই। কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনের ঝালমুড়ি বিক্রেতা মো. মিজানের ভাষ্য, রোদ যখন ঠিক মাথার ওপরে থাকে, তখন কিছু সময় যাত্রীছাউনিতে ছায়া পাওয়া যায়। এ ছাড়া দিনের শুরুতে এবং বিকেলে সূর্য হেলে পড়লে কিছুটা ছায়া মেলে। অন্য সময় ছাউনিতে কোনো ছায়া থাকে না। তাই যাত্রীরা ছাউনিতে যায় না। আধুনিক এসব যাত্রীছাউনির সমস্যার কথা স্বীকার করে সওজ ঢাকা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান বলেন, ছাউনির নকশা বিদেশে করা হয়েছে। এ দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী যাত্রীছাউনি ব্যবহার উপযোগী করতে কিছুটা পরিবর্তন করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘ছাউনির নির্মাণসামগ্রী চীন থেকে আনা হয়েছে। কিন্তু এগুলো দেখার পরই আমরা বলেছি, এই নকশা আমাদের দেশে চলবে না।’ সবুজ উদ্দিন খান বলেন, নতুন যে ছাউনি আনা হচ্ছে, সেগুলোর নকশা সুন্দর। সেগুলো ওপর থেকে বাঁকা হয়ে নিচের দিকে নেমেছে। এ ছাড়া পুরোনো ছাউনি পরিবর্তনের জন্য চীন থেকে প্রকৌশলী আসছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য যাত্রীছাউনিতে যাত্রী ও পথচারীদের বসার সুযোগ তৈরির পাশাপাশি আরও কিছু সুবিধা দেওয়া। আমরা আশা করছি, সব সুবিধা যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করা হলে ছাউনি ব্যবহারে জনসাধারণের আগ্রহ বাড়বে।’

No comments

Powered by Blogger.