যুক্তরাজ্যে ২৭ বছর থাকার পরও...

স্বামী ব্রিটিশ নাগরিক। ২৭ বছর ধরে দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছেন যুক্তরাজ্যে। পরিবারে রয়েছে দুজন ছেলে। একজন নাতনিও রয়েছে। তারপরও এক নারীকে যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কার করা হলো। পাঠিয়ে দেওয়া হলো সিঙ্গাপুরে। সিঙ্গাপুরের বংশোদ্ভূত আইরিন ক্লেনেল তাঁর স্বামী জনের সঙ্গে ইংল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ডারহাম শহরে বসবাস করতেন। যুক্তরাজ্যে জন্ম দুই ছেলের। পরিবারে আছে ছোট নাতনিও। কিন্তু এই মাসের শুরুর দিকে মিডেলসবার্গে অভিবাসন অফিসে নিয়মিত হাজিরা দিতে গেলে তাঁকে আটক করা হয়। তাঁকে স্কটল্যান্ডের সাউথ ল্যানার্কশায়ারে একটি হাজতে নিয়ে রাখা হয়। যখন বিয়ে করেছিলেন, তখন আইরিনকে যুক্তরাজ্যে থাকার জন্য অনির্দিষ্টকালের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একপর্যায়ে বয়স্ক পিতামাতার সেবা করার জন্য সিঙ্গাপুরে অবস্থান করার কারণেই সম্ভবত তাঁর রেসিডেন্সিয়াল স্ট্যাটাস বা ‘আবাসিক মর্যাদা’ বাতিল হয়ে যায়। সিঙ্গাপুরে পাঠিয়ে দেওয়ার পর আইরিন বিবিসিকে বলেন,
গত শনিবার তাঁকে সাউথ ল্যানার্কশায়ারে বন্দিশালা থেকে একটি ভ্যানে করে বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে সিঙ্গাপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘আটকের পর আমাকে আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি বাড়ি থেকে পোশাক নিয়ে আসার সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।’ আইরিন জানান, তাঁর স্বামীর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। সেবা করার মতো একমাত্র তিনিই রয়েছেন। যুক্তরাজ্য ও সিঙ্গাপুর থেকে কয়েকবার আবেদন করেছেন থাকার জন্য। কিন্তু যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষ তাঁর আবেদনে সাড়া দেয়নি। যুক্তরাজ্যে স্বরাষ্ট্র দপ্তরে যোগাযোগ করা তলে তারা এ নিয়ে আলাদা করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে তারা বলছে, প্রতিটি আবেদনই আলাদাভাবে গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই-বাছাই করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যাঁদের যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি নেই, তাঁরা দেশত্যাগ করবেন বলেই কর্তৃপক্ষ আশা করে। মাইগ্রেন্ট ভয়েস নামে একটি সংস্থা আইরিনকে যুক্তরাজ্যে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রচারণা শুরু করেছে। সংগঠনটির পরিচালক সাজেক রামাদান বলেন, পুলিশ কীভাবে পরিবারগুলোকে বিচ্ছিন্ন করছে এবং জীবন ধ্বংস করে দিচ্ছে, এ ঘটনা তার একটি উদাহরণ।

No comments

Powered by Blogger.