নারীদের বিপণিবিতান পুরুষদের দখলে!

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার বুড়িরবাজার মহিলা বিপণিবিতানের দোকানগুলো পুরুষেরা ব্যবহার করছেন। বিপণিবিতানের আটটি দোকানের মধ্যে মাত্র একটি দোকানে নারী ব্যবসায়ী আছেন। আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের বুড়িরবাজার হাটে নারীদের জন্য একটি বিপণিবিতান (উইমেন্স কর্নার) নির্মাণ করা হয়। নিয়মানুযায়ী মাসিক মাত্র ১০০ টাকা ভাড়ার বিনিময়ে এ বিপণিবিতানের ব্যবসায়ী ও দোকানদার হবেন শুধু নারীরা। সরকার দরিদ্র নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করে তাঁদের উন্নয়নের জন্য এ উদ্যোগ হাতে নেয়। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে এ উইমেন্স কর্নার করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয় সূত্র ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এবং মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, বুড়িরবাজার মহিলা বিপণিবিতানে রয়েছে আটটি দোকান। এখানকার অধিকাংশ দোকান প্রায়ই বন্ধ থাকে। এর মধ্যে একটি দোকানে একজন নারী দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছেন। আর বাকি সাতটি দোকান রয়েছে পুরুষদের দখলে। সেখানে বাসন্তী লেডিজ টেইলার্স নামের দোকানঘরটি বুড়িরবাজারের ব্যবসায়ী হারিছ মিয়া গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছেন।
হারিছ মিয়া বলেন, মহিলা বিপণিবিতানের ঘর খালি থাকায় তিনি কিছুদিন ধরে তা গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছেন। হামিদা বেগমের নামে ‘ভাই ভাই লন্ড্রি ঘর’ বরাদ্দ নিয়ে দীর্ঘদিন ব্যবসা করছেন মোহাম্মদ আলী। জোবেদ মিয়ার দখলে রয়েছে জেসমিন লেডিজ টেইলার্স। মর্জিনা বস্ত্রালয় নামের দোকানে গুদাম করেছেন মৃণাল কান্তি। জনৈক বেবীর নামে বরাদ্দ হাজেরা মেডিকেল হলে ব্যবসা করছেন পল্লিচিকিৎসক জয়নাল আবেদীন। সন্ধ্যা রানীর বরাদ্দ নেওয়া দোকানে আছেন শ্যামল নামের একজন ইলেকট্রিশিয়ান। পল্লিচিকিৎসক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বেবী আমার খালা। তিনি না থাকায় আমি সেখানে বসে মানুষজনকে চিকিৎসা দিই।’ শুধু দিপালী বস্ত্রালয়ে ব্যবসা করছেন দিপালী রানী রায়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয়ের কমিউনিটি অর্গানাইজার (সিও) রেজাউল করিম গতকাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দোকানগুলো এখন যে পুরুষেরা ব্যবহার করছেন তাঁরা কোনো না কোনোভাবে বরাদ্দ গ্রহণকারী নারীদের আত্মীয় বা পরিচিত। তবে বরাদ্দ পাওয়া নারীদের দোকানে ফিরে আসার জন্য নোটিশ দেওয়া হবে। তাঁরা যদি ব্যবসা না করতে চান তবে নতুনদের এ দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নেবেন। বরাদ্দ পাওয়া নারীরা যাতে দোকানগুলোতে ফিরে আসেন সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.