শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১৫,০০০ করার দাবি

নারায়ণগঞ্জে একটি শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এবার গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ১৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে। গতকাল বিকালে শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনারে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। সমাবেশ শেষে একটি লাল পতাকা মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে। শ্রমিক সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ স্কপ’র নেতা জাহেদুল হক মিলু। সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লবের সভাপতিত্বে শ্রমিক সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাস, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম গোলক, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সহসভাপতি এম.এ. মিল্টন, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক এস.এম. কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম শরীফ। জাহেদুল হক মিলু বলেন-জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে, সংসার চালানোর খরচ বাড়ছে একথা বলে মন্ত্রী, এমপি, প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি সবার ভাতা বাড়ে। সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন বাড়ে। কিন্তু শ্রমজীবী মানুষের বেতন বাড়ানোর ব্যাপারে তারা নিশ্চুপ। শ্রমিকদের কি বাসা ভাড়া দিতে হয় না? জিনিসপত্র কিনে খেতে হয় না? পে-স্কেলে এক বিরাট বৈষম্য করা হয়েছে। সর্বনিম্ন বেতন হবে ১৩ হাজার ৮০০ টাকা, আর সর্বোচ্চ বেতন হবে দেড় লাখ টাকারও বেশি, অথচ তারা একই বাজার থেকে জিনিস কিনবে। এত বৈষম্য সত্ত্বেও সরকার স্বীকার করেছে সর্বনিম্ন বেতন হবে ১৩ হাজার ৮০০ টাকা। তাহলে শ্রমিকদের ক্ষেত্রে বেতন কত হওয়া উচিত। অতীতে সব সময় পে-স্কেলের তুলনায় শ্রমিকদের বেতন বেশি থাকতো। কারণ, সরকারি কর্মচারীরা অনেক সুবিধা পায় বেসরকারি শ্রমিকরা পায় না। আমরা তাই বাজার দর, জীবন যাত্রার ব্যয় বিবেচনা করে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১৫ হাজার হাজার টাকা দাবি করছি। সমাবেশে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন দেশে শ্রম আইন, শ্রম বিধিমালা আছে। কিন্তু এগুলো মালিকের পক্ষে করা হয়েছে। শ্রম আইনে শ্রমিকদের যে সামান্য অধিকার আছে মালিকরা তাও দিতে চায় না। যখন তখন ছাঁটাই, কারখানা বন্ধ করার হুমকি দেয়া হয়। রি-রোলিং মিলের শ্রমিকরা নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুক, দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, নিরাপদ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করে না মালিকেরা। দেশে সবাই গণতন্ত্রের কথা বলে, কিন্তু ট্রেড ইউনিয়ন করা যে শ্রমিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার তা মালিকরা স্বীকার করতে চায় না। নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকরা সংখ্যায় বেশি, কিন্তু অসংগঠিত। সংগঠন ছাড়া শ্রমিক অসহায়। সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট শ্রেণি সচেতন বিপ্লবী ধারার ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তোলার সংগ্রাম করছে। নেতৃবৃন্দ সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের পতাকা তলে শ্রমিকদের সংগঠিত হবার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করুন।

No comments

Powered by Blogger.