যুক্তরাষ্ট্রে দম্পতির গুলিতে নিহত ১৪

ছুটির দিনের উৎসবে বন্দুকধারীর গুলিতে প্রাণ হারালেন ১৪ জন। এ তাণ্ডবে আহত হয়েছেন আরও ১৭ জন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে গত বুধবার এ ঘটনা ঘটে। এটি দেশটিতে তিন বছরের মধ্যে এ ধরনের সবচেয়ে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের ঘটনা।
ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান বার্নার্ডিনো কাউন্টির একটি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রে স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন দুই হামলাকারী। পুলিশ বলেছে, সৈয়দ রিজওয়ান ফারুক (২৮) ও তাসফিন মালিক (২৭) নামের দুজন ওই হামলা চালান। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কাউন্টির পুলিশপ্রধান জ্যারড বারগুয়ান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রাথমিকভাবে তাঁরা ভেবেছিলেন হামলায় তিনজন জড়িত। পরে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন, দুজন হামলা চালিয়েছেন। রিজওয়ান ফারুক যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া মার্কিন। আর স্ত্রী তাসফিন মালিকের জন্ম পাকিস্তানে। তাঁদের ছয় মাসের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের বিবরণে জানা যায়, ফারুক সান বার্নার্ডিনো কাউন্টির সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ হিসেবে পাঁচ বছর ধরে কর্মরত ছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা ইনল্যান্ড রিজিওনাল সেন্টারের সম্মেলন কক্ষে ওই উৎসবের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানস্থল ছাড়াও বিশাল ভবনটিতে শত শত লোক উপস্থিত ছিল। ফারুকও সেখানে যোগ দেন। তবে ‘বিশেষ পরিস্থিতি’তে উত্তেজিত অবস্থায় তিনি বেরিয়ে যান। এরপর স্ত্রী মালিককে নিয়ে ফিরে আসেন। এ সময় দুজনেই ছিলেন আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত। তাঁদের কাছে ছিল অ্যাসল্ট রাইফেল ও আধা-স্বয়ংক্রিয় হ্যান্ডগ্রেনেড। পরনে ছিল সামরিক-ধাঁচের পোশাক। ফিরে এসেই তাঁরা সম্মেলন কক্ষ এলাকায় নির্বিচারে গুলিবর্ষণ শুরু করেন। পরে ফারুক ও মালিক গাড়িতে করে পালিয়ে যান। পুলিশ তাঁদের পিছু নেয়। শুরু হয় বন্দুকযুদ্ধ। পরে গাড়িটি থেমে গেলে তার ভেতরে দুজনের লাশ পাওয়া যায়। ঘটনার সময় একজন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হলেও তাঁর অবস্থা গুরুতর নয়।
পুলিশ বলেছে, কর্মক্ষেত্রে অসন্তোষের কারণে এ হামলা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই বলেছে, তারা সন্ত্রাসবাদের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না। তবে হামলাকারী দুজনের কারোরই অতীত অপরাধের কোনো রেকর্ড পুলিশের কাছে নেই।
ফারহান খান নামে ফারুকের এক স্বজন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, কী কারণে তিনি এই পথ বেছে নিলেন, সে বিষয়ে তাঁরা কোনো ধারণা করতে পারছেন না।
যুক্তরাষ্ট্রে এখন গড়ে প্রতিদিন একটি করে এমন আগ্নেয়াস্ত্রের হামলার ঘটনা ঘটে থাকে। তবে একসঙ্গে এতজনের হতাহতের ঘটনা ২০১২ সালের পর আর ঘটেনি। ওই বছর একটি স্কুলে বন্দুকধারীর গুলিতে শিক্ষার্থীসহ ২৬ জন নিহত হয়।

No comments

Powered by Blogger.