বাম মোর্চার রোডমার্চে লাঠিপেটা- শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার খর্ব করবেন না

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ করার দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা যে আন্দোলন করছে, তা কখনো সহিংস রূপ নেয়নি। কিন্তু তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিগুলোতে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে সহিংস পন্থায়। এটা অগ্রহণযোগ্য। কারণ, শান্তিপূর্ণ পন্থায় সভা-সমাবেশ ও অন্যান্য প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের অধিকার সবার সাংবিধানিক অধিকার।
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার নেতা-কর্মীরা গত শুক্রবার রাজধানী ঢাকা থেকে সুন্দরবন অভিমুখে যে রোডমার্চ শুরু করেছেন, তার পদে পদে পুলিশ বাধা দিয়েছে। প্রথম দিন তাঁরা মানিকগঞ্জ পৌঁছালে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের ১০ জনকে আহত করে। মাগুরায়ও পুলিশ লাঠিপেটা করে ১০ জন নেতা-কর্মীকে আহত করে। রোডমার্চ ঝিনাইদহ শহরে ঢুকতে চেয়েছিল, কিন্তু পুলিশ ঢুকতে না দিয়ে যশোরের দিকে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু যশোরেও তাঁদের কোনো কর্মসূচি করতে দেওয়া হয়নি।
মাগুরায় পুলিশের লাঠিপেটা
পত্রিকায় পুলিশের লাঠিপেটার ছবি ছাপা হয়েছে, কিন্তু মাগুরার ওসি বলেছেন, লাঠিপেটা করা হয়নি। ঝিনাইদহ ও যশোরের পুলিশ কর্তৃপক্ষও বলেছে, তারা রোডমার্চে বাধা দেয়নি। কিন্তু সত্য হলো, এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বারবার বাধা দিয়েছে, নিষ্ঠুরভাবে বলপ্রয়োগ করেছে। এটা সরকারের গণতান্ত্রিক অঙ্গীকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
সুন্দরবনের পাশে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণসহ যেসব প্রকল্প সুন্দরবনের সার্বিক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলে বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা সেগুলো বাতিলের দাবিতে শান্তিপূর্ণ পন্থায় আন্দোলন করছে। তাদের এই অবস্থানের সঙ্গে সরকারের অবস্থানের বৈপরীত্য থাকতে পারে, কিন্তু তাই বলে বাম মোর্চা তাদের অবস্থানের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে কিংবা প্রকল্পগুলো বাতিল করার দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে পারবে না—এটা তো হতে পারে না।
আমরা আশা করব, পুলিশ বাহিনী দমন-পীড়নমূলক মানসিকতা ত্যাগ করবে; এ ধরনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে দেবে।

No comments

Powered by Blogger.