রাষ্ট্রধর্মের বৈধতা প্রশ্নে করা রিট আবেদন খারিজ

ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণার বৈধতা প্রশ্নে দায়ের করা একটি রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বেঞ্চ আজ সোমবার এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে রিটকারী আইনজীবী সমেন্দ্র নাথ গোস্বামী নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোরশেদুল আলম।
খোরশেদুল আলম পরে সাংবাদিকদের বলেন, আদালত আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন।
১৯৮৮ সালে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা এবং ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীতে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি ফিরিয়ে আনার পরও রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখার বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে গত আগস্টে এই রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমেন্দ্র নাথ গোস্বামী। ওই বিধান কেন সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে রুল চেয়েছিলেন তিনি। তার আবেদনে আইন সচিবকে বিবাদি করা হয়েছিলো।
এ বিষয়ে ৩০ আগস্ট শুনানি শেষে আদালত আদেশের দিন ঠিক করে দিয়েছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার আদালত খারিজের আদেশ দেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে ১৯৮৮ সালের ৫ জুন চতুর্থ জাতীয় সংসদে অষ্টম সংশোধনী অনুমোদন হয়। এর মাধ্যমে সংবিধানে অনুচ্ছেদ ২-এর সাথে ২(ক) দফা যুক্ত হয়। এতে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে।’
২০১১ সালের ২৫ জুন আনা পঞ্চদশ সংশোধনীতে ওই অনুচ্ছেদ আবার সংশোধন করা হয়। সেখানে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করবে।’
রিট আবেদনকারীর যুক্তি, একটি নির্দিষ্ট ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ২(ক) অনুচ্ছেদটি সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদের পরিপন্থি যেখানে, প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ তথা সংবিধানের প্রাধান্যের বিষয়ে বলা হয়েছে। আবেদনে বলা হয়, অনুচ্ছেদটি সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি সংক্রান্ত অষ্টম অনুচ্ছেদেরও পরিপন্থি, যেখানে ‘জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এবং এসব নীতি থেকে উদ্ভূত অন্য সব নীতিকে রাষ্ট্র পরিচালনার ‘মূলনীতি’ ঘোষণা করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.