তিউনিসিয়ায় নিহতদের ৩০ জনই ব্রিটিশ- হামলাকারী অন্যদের সহায়তা পেয়েছিল

সাইফুদ্দিন রেজগুই
তিউনিসিয়ার সৈকতের কাছে হোটেলে হামলাকারীকে অন্যরা সহযোগিতা দিয়েছিল। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে বলে গতকাল সোমবার দাবি করেছে। হামলায় নিহত ৩৮ জনের মধ্যে ৩০ জনই ব্রিটিশ। এর আগে ধারণা করা হয়েছিল, এ সংখ্যা ১৫। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন কয়েকজনকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খবর বিবিসি ও গার্ডিয়ানের। রাজধানী তিউনিস থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার দক্ষিণে সুস এলাকায় সৈকতসংলগ্ন ইম্পেরিয়াল মারাহাবা হোটেলে গত শুক্রবার সাইফুদ্দিন রেজগুই নামের এক হামলাকারী এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ওই ৩৮ জনকে হত্যা করে। পরে পুলিশের গুলিতে রেজগুই নিহত হয়। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ আলী আরুই বলেছেন, তদন্তকারী কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে নিশ্চিত হয়েছেন, এই হামলা পরিচালনায় রেজগুইকে অন্যরা সহযোগিতা দিয়েছিল। অজ্ঞাতপরিচয় ওই লোকেরাই তাকে কালাশনিকভ রাইফেল সরবরাহ করে এবং হামলার স্থল চিনিয়ে দেয়। পুলিশ ইতিমধ্যে রেজগুইয়ের বাবা ও কয়েকজন নিকটাত্মীয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তবে তাঁরা বিশ্বাসই করতে পারছেন না, রেজগুই এ ধরনের হামলা পরিচালনা করতে পারে।
যুক্তরাজ্যের পুলিশ জানিয়েছে, তিউনিসিয়ার পর্যটন এলাকায় আরও সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্রিটেনের বিভিন্ন বিমানবন্দরে কয়েক শ পুলিশ তদন্তের কাজ করছে। তিউনিসিয়াফেরত ব্যক্তিদের কাছ থেকে ওই হামলার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করবে তারা।
‘আইএস যুক্তরাজ্যের অস্তিত্বের হুমকি’: লন্ডন প্রতিনিধি জানান, হামলার সঙ্গে জড়িত জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসকে যুক্তরাজ্যের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ক্যামেরন বলেন, শুধু আইএসকে পরাজিত করলে হবে না, তাদের উগ্রবাদী মতাদর্শকেও নিঃশেষ করে দিতে হবে।
আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে এ প্রজন্মের যুদ্ধ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন বলেন, ব্রিটিশ মূল্যবোধ, সমাজব্যবস্থা ও জীবনাচারকে চ্যালেঞ্জ করেছে আইএস। ক্যামেরন মনে করেন, আইএসকে দমন করা সম্ভব, তবে সেটা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার।
সালেহী একাই হত্যা করে: ফ্রান্সে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লিয়ঁর কাছে একটি ছোট শহরে শুক্রবার মার্কিন মালিকানাধীন গ্যাস কারখানার ব্যবস্থাপক হার্ভে করনারকে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে ইয়াসিন সালেহী (৩৫)। সালেহী একটি ভ্যান চালিয়ে ওই কারখানায় ঢুকে পড়ে। ফরাসি গোয়েন্দাদের সালেহী জানিয়েছে, ওই রাসায়নিক কারখানায় ঢোকার আগে গাড়ি রাখার জায়গায় ব্যবস্থাপক হার্ভে করনারাকে (৫৪) সে একাই খুন করে। এরপর বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মহত্যার ব্যর্থ চেষ্টা করে। তবে সালেহী গোয়েন্দাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রোববার তাকে প্যারিসে নেওয়া হয়। সেখানে গোয়েন্দারা তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছেন। গতকাল পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। সালেহী দাবি করে আসছে, এই হামলা সে একাই চালিয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.