চরাঞ্চলের একমাত্র বাহন ঘোড়ার গাড়ি

বাংলাদেশের প্রাচীনতম যানবাহন ঘোড়ার গাড়ি। কোথাও কোথাও ঘোড়ার গাড়ি  টমটম গাড়ি নামেও বেশি পরিচিত। এক সময় এই গাড়িটি ছিল জমিদার, রাজা-বাদশা ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং রাজ পরিবারের সদস্যদের পরিবহনের প্রধান বাহন। বর্তমানেও হারিয়ে যায়নি সেই জীবচালিত বিশেষ যান ঘোড়ার গাড়ি। এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় চরাঞ্চলে একমাত্র বাহন ঘোড়ার গাড়ি। পণ্য বোঝাই করে খুরের ঠক ঠক আওয়াজ তুলে পিচঢালা রাস্তায় রিকশা, বাস, ট্রাক, ভ্যান আর টর সাইকেলের সঙ্গে মিশে যেন যন্ত্রযানের মতোই এক বিশেষ যানের চলাচল। সর্ব প্রথম এই গাড়ির ব্যবহার ইংরেজরা শুরু করলেও স্থানীয় অভিজাত শ্রেণীর মানুষেরাও এর সুবিধা নেয়। বর্তমানে তা চলে আসে সাধারণ মানুষের মধ্যে। গঙ্গাচড়ার তিস্তার চরাঞ্চলে প্রায় শতাধিক পরিবার ঘোড়ার গাড়ির ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছেন। একটি ঘোড়ার গাড়িতে ১০-১২ জন যাত্রী বহন করা হয়, যা ঘোড়ার ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি। ভাড়ার টাকা বেশি পাওয়ার লোভে বোঝাই করা হয় অতিরিক্ত যাত্রী ও পণ্য। এতে অসহনীয় কষ্ট সহ্য করতে হয় নিরীহ ঘোড়াকে। চর ইচলীর আবদুল গফুর, নজরুল, সিরাজুল, সজীব, আজিজুল, মজনু, শাহীন ঘোড়াগুলো বগুড়া, কুলাঘাট, বকশিগঞ্জ, কুড়িগ্রাম থেকে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় কিনে নিয়ে আসেন। আর গাড়ি তৈরি করতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার প্রয়োজন। মাত্র ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকায় সব খরচ বাদে দৈনিক ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় হয় বলে জানা গেছে।
তারা আরও জানান, বর্তমানে আমাদের এই ঘোড়ার গাড়িতে মহিপুর, কাউনিয়া, আদিতমারী, কাশিয়াবাড়ী, গঙ্গাড়চায় বিভিন্ন ধরনের মালামালসহ যাত্রী বহন করা হয়। প্রতিদিন চরাঞ্চলে রাস্তায় চলাচলের পাশাপাশি এই গাড়িগুলো ঈদ, পয়লা বৈশাখ, রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে টমটমের ব্যবসা করে সংসারে অনেকেই স্বাবলম্বী হচ্ছে। ফলে পরিবেশ বান্ধব এই ঘোড়ার গাড়ির ব্যবসায় ঝুঁকে পড়ছে অনেকে।

No comments

Powered by Blogger.