জাতিসংঘের জরুরি অবস্থা

ইরাক-তুরস্ক সীমান্তের কাছের সিরনাক এলাকায় ইরাকের
ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের একটি উদ্বাস্তু শিবিরের চিত্র। আইএস
জঙ্গিদের হামলার মুখে ঘরবাড়ি ছাড়া এ ইয়াজিদিরা
পাহাড়-পর্বতে ও শরণার্থী শিবিরে চরম দুর্দশায়
দিন কাটাচ্ছে। গতকাল তোলা ছবি। এএফপি
ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের দ্রুত অগ্রাভিযানের কারণে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জাতিসংঘ ইরাকে তাদের সর্বোচ্চ মাত্রার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। কুর্দি কর্মকর্তারা বলছেন, দেড় লাখ শরণার্থী জড়ো হওয়ায় দহুক শহরের পরিস্থিতি ভয়াবহ। এই প্রেক্ষাপটেও উত্তর ইরাকের সিনজার পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়া ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের সদস্যদের উদ্ধারে অভিযান চালানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে মনোনীত প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-ইবাদি নতুন সরকার গঠনের তৎপরতা শুরু করেছেন। আর ঘরে-বাইরে সমর্থন হারানো সত্ত্বেও ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বর্তমান অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকি। খবর এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসির। জাতিসংঘের হিসাবে বলা হয়েছে, চলমান সংঘাতে ১২ লাখ ইরাকি দেশের ভেতরে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি নিকোলাই ম্লাদেনভ বলেন, ৩ মাত্রার (সর্বোচ্চ) জরুরি অবস্থা জারি করায় ঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়া শরণার্থীদের সমস্যা মোকাবিলায় অর্থ, প্রয়োজনীয় সাহায্যসামগ্রী ইত্যাদির ব্যবস্থা করা সহজ হবে।
এদিকে এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের একটি বিশেষ বাহিনী সরেজমিন ঘুরে সিনজার পাহাড়ে আটকা পড়া ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের লোকের সংখ্যা ধারণার চেয়ে কম দেখতে পেয়েছে। সেখানে লোকজনের অবস্থা যতটা খারাপ বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, বাস্তবে তত খারাপ নয়। ফলে ওই এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালানোর সম্ভাবনা কম। ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়াও বিমান থেকে খাদ্যসামগ্রী ফেলা শুরু করেছে। আর আইএস জঙ্গিদের রুখতে ইরাকি কুর্দিদের অস্ত্র দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এদিকে এক অনলাইন বিবৃতিতে নতুন মনোনীত প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল ইবাদি গত বুধবার বলেন, তিনি সরকার গঠনের আলোচনায় অংশ নিতে প্রতিনিধি নিযুক্ত করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক জোটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী পদে নুরি আল-মালিকির থেকে যাওয়ার প্রচেষ্টায় বড় ধাক্কা দিয়ে তাঁর দাওয়া পার্টি এরই মধ্যে ইবাদিকে সমর্থন দিয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এক বিবৃতিতে সবার অংশগ্রহণমূলক একটি সরকার গঠনে দ্রুত কাজ করতে ইবাদির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অপেক্ষাকৃত নরমপন্থী হিসেবে পরিচিত ইবাদি ইরাকের উদারপন্থী সুন্নি নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা করে সরকার গঠন করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.