চিফ হুইপকে ‘নিচে’ নামাল কে! সংবাদপত্র, নাকি তাঁর কর্মকাণ্ড?

জাতীয় সংসদের একজন সদস্যকে কে ‘নিচে’ নামায় বা কীভাবে তাঁকে নিচে নামানো যায়? এই প্রশ্নটি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে একজন সংসদ সদস্যের মন্তব্যের পর। তিনি একই সঙ্গে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপও। ভাতিজাকে সংসদ ভবনে ক্যানটিন ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয় সংসদের সদস্য,...আমাদের এত নিচে নামাবেন না।’
৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের বক্তব্যে এটা মনে হওয়া খুবই স্বাভাবিক যে সংবাদমাধ্যমই সংসদ সদস্যদের ‘নিচে’ নামানোর জন্য দায়ী! বিষয়টি কি আসলে তাই? চিফ হুইপ ও সংসদ সদস্য হয়ে নিজের ভাতিজাকে সংসদ ভবনে ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়ার কাজটির সঙ্গে কি সাংবাদিক বা সংবাদপত্রের কোনো সম্পর্ক আছে? এই অনৈতিক কাজটি করেছেন তিনি নিজে এবং সংবাদপত্রের পক্ষ থেকে শুধু তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাঁর কাছে প্রশ্ন, কোনটি একজন সংসদ সদস্যকে নিচে নামাল? তাঁর কাজটি, নাকি সংবাদপত্রের প্রশ্নটি?
প্রথম আলোয় সংসদ ভবনে ক্যানটিন ব্যবসা নিয়ে যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়েছে, তাতে এটা পরিষ্কার যে চিফ হুইপের ভাতিজা বলেই ইসতিয়াক রাব্বি পার্লামেন্টস মেম্বার্স ক্লাবটি পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন। আর ভাতিজার ব্যবসার সুযোগ বাড়াতে তাঁর কাছ থেকেই সব খাবার কেনার এক স্বেচ্ছাচারী বিধানও করেছেন।
চিফ হুইপ একজন ‘সংসদ সদস্য’ হিসেবে কোনোভাবেই ‘নিচে’ নামতে চান না। তাঁর এই আকাঙ্ক্ষাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু কাজই মানুষকে নিচে নামায় বা ওপরে ওঠায়। চিফ হুইপ যদি নিজের বরাদ্দের বাইরে সাতটি বাসা দখল করে রাখেন, ক্রেস্টের বদলে প্রকাশ্যে ‘ক্যাশ’ চেয়ে বসেন বা নিজের ভাতিজাকে সংসদ ভবনে ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়ার মতো অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন, তবে তাঁর ‘নিচে’ নামা কেউই ঠেকাতে পারবে না!

No comments

Powered by Blogger.