ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না by ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশী

বিচারিক প্রক্রিয়া সর্বাবস্থায় স্বচ্ছ ও যথাযথ হওয়া আবশ্যক। ন্যায়বিচারের অন্যতম শর্ত হচ্ছে- কেবল ন্যায়বিচার করলেই হবে না, ন্যায়বিচার হয়েছে সেটাও স্পষ্ট হতে হবে। সুবিচার এবং বিচারের গ্রহণযোগ্যতার প্রয়োজনেই তা দরকার। সেটা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। চার দশক আগে যারা সেদিন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে এবং পাকবাহিনীর অনুচর হয়ে নানা অপকর্ম ও ফৌজদারী অপরাধে জড়িত হয়েছে, তাদের অপকর্মের বিচার অনেক আগেই সম্পন্ন হওয়া উচিত ছিল। বিলম্বে হলেও সরকার সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে, সে জন্য সাধুবাদ জানাতে হয়। তবে এই বিচিত্র অপরাধের বিচার করতে গিয়ে যেন কোনোভাবেই স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচারের ব্যত্যয় না ঘটে।
লক্ষ করা যাচ্ছে, এই বিচার কার্য চালাতে গিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা, মামলা পরিচালনাকারী ও বিচারকবৃন্দ সবাই হিমশিম খাচ্ছেন। সুদীর্ঘকাল আগে সংগঠিত কোনো অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া যথাযথভাবে পরিচালনা করা নানা কারণে দুরূহ হয়ে পড়ে। সময় ক্ষেপণের কারণে অনেক সাক্ষ্য-প্রমাণ হারিয়ে যায়। সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাব এবং অস্পষ্টতা প্রকৃত অপরাধীকে আড়াল দেয়। আবার একের অপরাধ অন্যের ওপর চলে যাওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জাতীয় রাজনীতির দুই বিবদমান পক্ষের পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ও জিঘাংসা। এমনই এক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে, যেখানে ন্যায়-অন্যায়ের প্রশ্নটি গৌণ হয়ে পড়েছে। একপক্ষ চাইছে প্রতিপক্ষকে যে কোনো পন্থায় ঘায়েল করতে, যুক্তি-তর্ক সাক্ষ্য-প্রমাণের প্রয়োজন নেই, অপরাধের গুরুত্ব বা আইনি বাধ্যবাধকতা বিবেচ্য নয়। ন্যায়-অন্যায় যে কোনো পন্থায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে হবে। এক পক্ষের কাছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কোনো শাস্তি নয়, মৃত্যুদণ্ড ছাড়া আর কোনো দণ্ডই দণ্ড নয়। অপর পক্ষ প্রমাণ করতে চায়, সব অভিযোগই মিথ্যা, একাত্তরে এই অভিযুক্তদের কেউ-ই কোনো অপরাধ করেনি।
এমন পরিস্থিতিতে বিচারকার্য চালানো যে কতটা বিব্রতকর, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চয়ই তা অনুভব করছেন। মনে হয় সেটা এখন সবচেয়ে বেশি অনুভব করছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। তার দলেরই একাংশের অতি উৎসাহে গড়ে উঠেছিল শাহবাগের কথিত গণজাগরণ মঞ্চ। সেই মঞ্চ থেকে ফরমান জারি করে বিচারকার্যের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। অগ্রপশ্চাত বিবেচনা না করে তার দলের এ নেতা-নেত্রীরা এই মঞ্চের পেছনে কাতারবন্দি হয়ে গেলেন। রাষ্ট্রীয়ভাবে তিন স্তরের নিরাপত্তায় শাহবাগের ব্যস্ত চৌরাস্তাটিকে দিনের পর দিন অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে। সেই চাপের মুখে সরকারকে আইন পাল্টাতে হয়েছে। আদালতকে রায় পাল্টাতে হয়েছে। এখন আবার সরকার পক্ষই সেই মঞ্চ ভেঙে ফেলার কাজে হাত দিয়েছে। মনে হয় তারা এতদিনে বুঝতে পেরেছেন যে, তারা আসলে ফ্রাংকেনস্টাইন তৈরি করেছেন। ফ্রাংকেনস্টাইন তার নির্মাতাকেও ছাড় দেয় না।
প্রথম যখন কিছু তরুণ ব্লগার কায়রোর তাহরির স্কয়ারের ধাঁচে শাহবাগ চত্বরে জমায়েত হয়, তখন অনেকেই রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন। আমাদের চলমান বন্ধ্যা ও দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির বিরুদ্ধে দেশের তরুণ প্রজন্ম প্রতিবাদী হয়েছে- তেমন ধারণার বশবর্তী হয়ে আমি নিজেও তাতে আশার আলো দেখে উৎসাহ বোধ করেছি। শাহবাগ চত্বরে সশরীরে উপস্থিত হয়ে তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছি। চায়ের দোকানে বসে উদ্যোক্তাদের উদ্দীপনাময় বক্তব্য শুনেছি। কিন্তু দু-একদিন পরই ভুল ভাঙ্গতে শুরু করে। প্রথমত, সরকারি দল ও বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থার নজীরবিহীন প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহায়তা থেকে স্পষ্ট হয়ে পড়ে, এই মঞ্চ তরুণ প্রজন্মের স্বতঃপ্রণোদিত প্রতিবাদী কণ্ঠের বহিঃপ্রকাশ নয়; সরকারি দলেরই মদদে পরিকল্পিতভাবে তার আÍপ্রকাশ ও বিকাশ ঘটছে। অতঃপর কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্লগারের মহানবী ও ইসলামের বিরুদ্ধে নোংরা লেখালেখি নিয়ে বিভিন্ন মহলের ক্ষোভ ও সমালোচনার প্রেক্ষাপটে শাহবাগের মঞ্চ থেকে সেই ব্লগারদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা সবার চোখ খুলে দেয়। ফলে আবার কলম ঘুরিয়ে লিখতে হয়েছে। আমার মতো অনেকের ক্ষেত্রেই তা ঘটেছে। গণজাগরণ মঞ্চই এখন এই সরকারের গলার কাঁটা। সেই কাঁটা অপসারণের অপারেশন চলছে, তবে সরকারের যতটা ক্ষতি হওয়ার তা হয়েই গেছে।
জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে সরকারি দলের পক্ষ থেকে। এ নিয়ে দেদার মিটিং-মিছিল হচ্ছে। কিন্তু সে ব্যাপারে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট নয়। আইনমন্ত্রী বলেছেন, আইনের অবস্থান আরও স্পষ্ট করে তবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি বলেছেন, আজ জামায়াতের বিরুদ্ধে মামলা হবে, আর আগামীকাল সে জন্য আইন পরিবর্তন করা হবে, আমি এর পক্ষে নই। এ থেকে বুঝতে কষ্ট হয় না যে, আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকে বিদ্যমান আইনে তিনি জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। তিনি আরও বলেছেন, আমাকে সারা পৃথিবীতে ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে কাদের মোল্লার ব্যাপারে।
তা থেকেও সরকারের নাজুক অবস্থান বুঝতে আর কিছুই বাকি থাকে না।
কাদের মোল্লা নির্দোষ ছিলেন তা মনে করার কোনো কারণ নেই। একাত্তরে জামায়াত যে ভূমিকা পালন করেছে, তার অনেক কিছুই ক্ষমার অযোগ্য। কাদের মোল্লাও তখন তাতে শরীক ছিলেন। কিন্তু অপরাধের শাস্তির পরিমাপ বিচারিক প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত হতে হয়। কত বছরের সাজা হবে, মৃত্যুদণ্ড হবে কি-না, তা বাদী বা সংক্ষুব্ধদের দাবির ভিত্তিতে নির্ধারিত হতে পারে না। তাহলে তো আদালতের প্রয়োজন থাকে না। রাজপথে জনতার আদালত বসিয়েই বিচারকার্য সম্পন্ন করা যায় এবং রাজপথেই সেই দণ্ডাদেশ কার্যকর করা যায়। আইনমন্ত্রী কি সে ব্যাপারেই পৃথিবীতে প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন?
দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে এই জাতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। একাত্তরে জামায়াত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানোর জন্য পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষে অস্ত্র ধরেছে। একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবী হত্যায় এ দলের অঙ্গসংগঠন আলবদর বাহিনী প্রত্যক্ষ ভূমিকায় ছিল বলে সাক্ষ্য-প্রমাণ রয়েছে। এরপরও এই নামে এ দেশে দল পরিচালনা করতে দেয়া নাৎসি দলকে জার্মানিতে নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়ার সুযোগ প্রদানের সমতুল্য। জার্মানি কি তা দিয়েছে?
একাত্তরে আমরা যখন পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ছি, তখন এই দলের যে নেতা-কর্মীরা পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য পোষণ করেছিলেন, তারা কি এখনও পাকিস্তানের প্রতি অনুগত আছেন? তারা কি এখন উপলব্ধি করেন যে, তাদের সেদিনের রাজনৈতিক অবস্থান ভুল ছিল? তারা কি সেই আনুগত্য প্রত্যাহার করে তাদের সেদিনের ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন? পাকিস্তানিদের আÍসমর্পণ এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের সর্বজনীন স্বীকৃতির পর এদেশের কোনো নাগরিকের পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য পোষণ করার কোনো সুযোগ নেই। সে কারণেই একাত্তরে যারা প্রকাশ্যে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরোধিতা করে পাকিস্তানকে রক্ষা করার প্রয়াসে সক্রিয় ছিল, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাদের মনোভাব পরিবর্তিত হয়েছে কি-না ্এবং তারা বাংলাদেশকে মেনে নিয়েছে কি-না, তা অবশ্যই স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। দুর্ভাগ্যবশত স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারগুলো এ বিষয়টির দিকে দৃষ্টি দেয়নি।
বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধ, কিংবা ফৌজদারী অপরাধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল না। সাধারণ ক্ষমার আওতায় পড়ে না- এ ধরনের অপরাধ যারা করেছে তাদের চিহ্নিত করে বিচারের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা অত্যাবশ্যক ছিল। বাদবাকি পাকিস্তান সমর্থক সাধারণ নাগরিককে অনুশোচনার সুযোগ দিয়ে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে দেয়াও জাতীয় সংহতির স্বার্থে জরুরি ছিল। বঙ্গবন্ধু সে পথেই এগোতে চেয়েছেন। কাজটি তখন ঠিকভাবে সম্পন্ন করা হয়নি। সেদিন তা করা হয়নি বলেই আজ কাফ্ফারা দিতে হচ্ছে।
একাত্তরে কোনো ব্যক্তি যদি তার রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা থেকে নীতিগতভাবে মনে করে থাকে যে, পাকিস্তান ভেঙে ফেলার পরিণতি ভালো হবে না, আমরা এক শোষণের হাত থেকে আরও বড় শোষণের আওতায় চলে যাব, সেই ব্যক্তি যদি অন্য কোনো অন্যায় বা জবরদস্তিমূলক কাজে না জড়িয়ে থাকে, তাহলে সেটাকে রাজনৈতিক ভিন্নমত হিসেবে গণ্য করতে হবে, অপরাধ হিসেবে নয়। এ ধরনের রাজনৈতিক ভিন্নমতের জবাব রাজনৈতিকভাবেই দিতে হবে। স্বাধীনতার পক্ষ শক্তিকে তাদের কাজের মধ্য দিয়ে এবং দেশ গঠনের সফলতা দিয়ে প্রমাণ করতে হবে যে, তাদের সিদ্ধান্তই সঠিক ছিল। দেখিয়ে দিতে হবে, দেশ ও দেশের মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো আছে। যা পাকিস্তানের কাঠামোতে সম্ভব ছিল না। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির জন্য সেটাই সবচেয়ে বড় শাস্তি।
আমরা কি সেই শাস্তির পটভূমি তৈরি করতে পেরেছি?
জাতি গঠন এবং সুশাসনের রাষ্ট্রযন্ত্র প্রতিষ্ঠায় মনোনিবেশ না করে কেবল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে কিংবা স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ বিভাজনের মাধ্যমে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে একাত্তরের দানবটিকে কবর থেকে তুলে এনে আবার জীবন্ত করা হয়েছে। যার মোকাবেলায় এখন সরকারের নিজেকেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। অপরদিকে শত্র“র শত্র“ আমার বন্ধু- এ নীতি অবলম্বন করে আমাদের প্রধান বিরোধী দল সেই দানবকে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে। সিন্দাবাদের কাঁধে চেপে বসা দৈত্যের মতো সেই দানব আমাদের বিরোধী দলের পথনির্দেশক হয়েছে! জাতিকে কি নতুনভাবে একাত্তরের বিভাজনে বিভাজিত করার চেষ্টা চলছে? জাতির জন্য এর চাইতে বড় দুর্ভাগ্য আর কী হতে পারে!
১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান রাজনৈতিক দলবিধি আইন জারি করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিধি জারি করেন। সেই বিধি অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামীও নতুনভাবে দল গঠনের সুযোগ লাভ করে। সেই কাজটি বিবেচনাপ্রসূত হয়েছে বলা যায় না। একাত্তরে যেসব দল মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাকবাহিনীর সহযোগী হয়েছে, বিশেষ করে যুদ্ধ কবলিত দেশে শত্র“র দেয়া নির্বাচনে অংশ নিয়ে ক্ষমতার ভাগ নিয়েছে, তাদের দল পুনরুজ্জীবনের সুযোগ না দিলে তা মোটেই অযৌক্তিক হতো না। তাতে কারোই কিছু বলার থাকত না। সেক্ষেত্রে এসব দলের বা চিন্তাধারার লোকেরা নতুন রাষ্ট্রের বাস্তবতা মাথায় রেখে তাদের রাজনৈতিক চিন্তাধারার পুনর্র্বিন্যাস ঘটাতে বাধ্য হতো। তাদের একাত্তরের পরিচয় পেছনে রেখে নতুনভাবে নতুন কোনো নামে দল গড়ে তুলতে হতো। যেমনটি শুরু করেছিলেন জামায়াতের তাত্ত্বিক ও বর্ষীয়ান নেতা মওলানা আবদুর রহীম। তিনি নতুন করে জামায়াতে ইসলামী নামে দল গঠনের বিরোধী ছিলেন এবং ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ নামে দল পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ঢালাওভাবে সব দলের পুনরুজ্জীবনের সুযোগ অবারিত হওয়ার পর তার প্রয়াস ব্যর্থ হয়ে যায়। কট্টরপন্থীরা পুরনো নামেই এবং পুরনো চিন্তাধারা মাথায় নিয়েই নতুনভাবে রাজনীতির মাঠে নামার সুযোগ পায়।
যে কোনো রাষ্ট্রের স্বাধীনতা সংগ্রামে বিরুদ্ধ পক্ষ বা পঞ্চম বাহিনী থাকা বিচিত্র নয়। স্বাধীনতা অর্জিত হওয়ার পর তাদের সবাইকে শূলে চড়াতে গেলে তা হিতে বিপরীত ঘটাতে পারে। সে জন্যই বিরুদ্ধ পক্ষের সবাইকে ঢালাওভাবে যুদ্ধাপরাধী বা মানবতাবিরোধী আখ্যা দিয়ে সবার জন্যই মৃত্যুদণ্ড পূর্বনির্ধারিত করে দেয়া দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক নয়। জাতিদেহের সুস্বাস্থ্যের জন্যই যুদ্ধাপরাধী বা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার সম্পন্ন করার বিকল্প নেই। তবে বিচার প্রক্রিয়াকে অবশ্যই তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে এবং তার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত ও দৃশ্যমান হতে হবে। কোনো অবস্থাতেই যেন এমন ধারণা সৃষ্টির সুযোগ দেয়া না হয় যে, বিরোধী দলকে দমনপীড়নের লক্ষ্যে এই বিচার প্রক্রিয়াকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।
ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশী : রাজনীতিক, ভূ-রাজনীতি ও উন্নয়ন গবেষক
shapshin@gtlbd.com

No comments

Powered by Blogger.