আকাশে গণহত্যা -ঘৃণ্য হামলার বিরুদ্ধে বিশ্ববিবেক জাগ্রত হোক

গত বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডাম থেকে কুয়ালালামপুরে যাওয়ার উদ্দেশে মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ এমএইচ ১৭ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনাটি বিশ্ববাসীকে ক্ষুব্ধ, স্তম্ভিত ও শোকাহত করেছে। ইউক্রেনের আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে উড়োজাহাজটি ভূপাতিত করা হলে ২৯৮ আরোহীর সবাই নিহত হন। এ ধরনের ঘৃণ্য হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। এ মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। মাত্র কয়েক মাস আগে এই এয়ারলাইনসেরই আরেকটি উড়োজাহাজ কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিংয়ে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হওয়ার পর আজও হদিস মেলেনি। প্রথমটির কারণ দুর্ঘটনা হলেও দ্বিতীয়টি যে ঠান্ডা মাথায় গণহত্যা, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।

উল্লেখ্য, মালয়েশীয় উড়োজাহাজটি ইউক্রেনের আকাশসীমা পার হওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে সেটি ভূপাতিত করে। এই হামলার ঘটনা নিয়ে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও রুশপন্থী বিদ্রোহীরা পরস্পরকে দায়ী করেছে। তাদের বিবাদের সঙ্গে মালয়েশীয় উড়োজাহাজের নিরীহ যাত্রীরা কোনোভাবেই জড়িত ছিলেন না। এর পরও তাঁদের জীবন দিতে হলো। এটি বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি।
এ ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিরোধ কেবল ওই দেশ বা অঞ্চলের মানুষকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বিশ্বের অন্য প্রান্তের নিরীহ মানুষের জীবনও কেড়ে নিতে পারে। এটি যেমন ইউক্রেনের বেলায় সত্য, তেমনি সত্য মধ্যপ্রাচ্যসহ যুদ্ধকবলিত অন্যান্য এলাকার জন্যও।
জাতিসংঘ মহাসচিবসহ বিশ্বনেতারা মালয়েশীয় উড়োজাহাজ ভূপাতিত করার ঘটনার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং অপরাধীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। আমরাও মনে করি, এটি মানবতা ও সভ্যতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আদালতে এর বিচার করতে হবে। বিশ্ববিবেককে জাগ্রত করতে হবে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে।
ইউক্রেনের জাতিগত বিবাদ যে সেই দেশটির মধ্যেই সীমিত নয়, তা আবারও প্রমাণিত হলো। পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে যত দিন বিরোধ থাকবে, তত দিন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তির ওপর হুমকি থেকেই যাবে।

No comments

Powered by Blogger.