গাজায় নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ

গাজায় ইসরাইলের নৃশংসতা ভয়ংকর পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাদের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে লাশের পর লাশ পড়ছে গাজায়। বাড়িঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে। শিশুরা আতঙ্কে হিম হয়ে গেছে। ভয়ে মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছে। বাসিন্দাদের চোখে এ যেন এক ‘কিয়ামত’। এরই মধ্যে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৭০ ছাড়িয়েছে। শুক্রবার রাতে গাজা উপত্যকায় চার শিশুসহ একই পরিবারের ৯ জন নিহত হয়েছেন। তাদের লাশ দাফন করা হয়েছে শনিবার। নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, তাদের বাড়িতে একই সঙ্গে ইসরাইলি পদাতিক বাহিনী সমরাস্ত্র, ছোটখাট অস্ত্র দিয়ে হামলা করে। ভয়াবহ সে হামলা ধ্বনি-প্রতিধ্বনি ওঠে পুরো গাজায়। থর থর করে কাঁপতে থাকে। আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায় রাতের গাজার আকাশে উঠে গেছে। এসব দৃশ্য দূর থেকে সিএনএন সহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল সরাসরি প্রচার করেছে। এক ইসরাইলি কিশোরকে খুন ও তার পাল্টা হিসেবে দুই ফিলিস্তিনিকে হত্যার জের ধরে এবারে গাজা আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইল। তারা সর্বশক্তি দিয়ে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযান বলতে নিরীহ গাজাবাসীর ওপর নির্বিচারে আক্রমণ। তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে তা গুঁড়িয়ে দেয়া। আন্তর্জাতিক মহল এ বিষয়ে ইসরাইলকে সাবধান করলেও কারো কথায় তোয়াক্কা করছে না সে। উল্টো কয়েক গুণ শক্তি সঞ্চয় করে হামলা জোরালো করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে, তবে গাজা হামলার ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন মধ্যপ্রাচ্য শান্তিচুক্তির জন্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইলকে সাবধান করেছে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। আরব লীগ মিশরের রাজধানী কায়রোয় বৈঠক করেছে। কিন্তু তাদের ভূমিকা কি সে বিষয়ে স্পষ্ট হওয়া যায় নি। ওদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যদি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ইসরাইলের অপরাধ ও মানবাধিকার লংঘনের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয় তাহলে তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক আদালতগুলোতে যাবেন। এর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতও। তিনি নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান ইসরাইলে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করতে ও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে। গাজা উপত্যকার ওপর থেকে ইসরাইলের অবরোধ তুলে নিতে ও ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষার আহ্বান জানান তিনি। তিনি এ বিষয়ে খসড়া প্রস্তাবে বলেছেন, বেসামরিক মানুষকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ফিলিস্তিনে এখন চরম মানবিক সঙ্কট। মানুষের খাবার নেই। পানি নেই। এ অবস্থায় তাদের মানবিক সাহায্য প্রয়োজন অবিলম্বে।

No comments

Powered by Blogger.