যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে লিবিয়া যাচ্ছেন আফ্রিকার নেতারা

যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে সংঘাত নিরসনের লক্ষ্য নিয়ে আজ রোববার লিবিয়ায় যাচ্ছে আফ্রিকার নেতাদের একটি দল। এ দলে নেতৃত্ব দেবেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা।
আফ্রিকান ইউনিয়নের (এইউ) প্রতিনিধিদলে জ্যাকব জুমা ছাড়াও থাকছেন কঙ্গো, মালি, মৌরিতানিয়া ও উগান্ডার নেতারা। দলটি ত্রিপোলি এবং বিদ্রোহীদের ঘাঁটি বেনগাজি সফর করবে। যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানোর লক্ষ্যে তাঁরা গাদ্দাফি ও বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এইউ নেতাদের লিবিয়া সফর ও ত্রিপোলিতে সে দেশের নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির সঙ্গে বৈঠকে সম্মতি দিয়েছে ন্যাটো। এ ছাড়া তাঁরা আজ ও আগামীকাল বেনগাজিতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, লিবিয়া সরকার ও বিদ্রোহী, উভয় পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয় হবে যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য দুই পক্ষকে রাজি করানো এবং এরপর রাজনৈতিক সংলাপের পথ উন্মুক্ত করা।
বেনগাজি থেকে বিবিসির সাংবাদিক জন লিয়েন জানান, গাদ্দাফি মনে করছেন আফ্রিকার নেতারা তাঁর পক্ষে কিছুটা হলেও সহানুভূতিশীল হবেন। আর বিদ্রোহীরা জানিয়ে দিয়েছে, গাদ্দাফি সরকারের সঙ্গে তারা কোনো ধরনের আলোচনায় যাবে না।
এ অবস্থায় এখন যুদ্ধের ময়দানে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মিসরাতা শহরে। সেখানে দুই পক্ষের লড়াইয়ে প্রতিদিন অনেক মানুষ হতাহত হচ্ছে। বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, গাদ্দাফি বাহিনী বেসামরিক লোকজনের বাড়িঘর লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল শনিবারও সেখানে গাদ্দাফি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জানিয়েছে, সম্ভব হলে সেনাবাহিনীর সাহায্য নিয়ে মিসরাতা থেকে আহত লোকজনকে সরিয়ে আনতে এবং মানবিক সাহায্য দিতে তারা প্রস্তুত। ইইউর পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাশটন চিঠি দিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
এদিকে, মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তে আজ রোববার লিবিয়া যাচ্ছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল।
গত বৃহস্পতিবার ব্রেগা শহরের কাছে ন্যাটো বাহিনীর বিমান হামলায় বিদ্রোহীদের হতাহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ন্যাটোর প্রধান অ্যান্ডারস ফগ রাসমুসেন। গত শুক্রবার তিনি বলেন, ‘হতাহতের ঘটনায় আমি সত্যিই দুঃখিত। তবে আমি বলব, যুদ্ধের মাঠের পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যায়। এর আগে আমরা দেখিছি, বেসামরিক লোকজনের ওপর হামলার জন্য গাদ্দাফি বাহিনীই ট্যাংক ব্যবহার করছে। কাজেই ওই দিন ট্যাংকবহর লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো যে বিদ্রোহীদের, তা আগে বোঝা যায়নি।’

No comments

Powered by Blogger.