ফিলিস্তিনে মন্ত্রিসভার পদত্যাগ, শিগগিরই নতুন সরকার

নির্বাচনকে সামনে রেখে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গতকাল সোমবার ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী সালাম ফায়েদসহ তাঁর মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করেছে। পরে সালাম ফায়েদকে আবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ এবং তাঁকে নতুন করে সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। কর্মকর্তারা এ কথা জানান।
গতকাল সকালে পশ্চিম তীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিন মন্ত্রিসভার বৈঠক চলাকালে পদত্যাগের এই ঘোষণা দেওয়া হয়। একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, এই ঘোষণার পরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ফায়েদ প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে দেখা করতে যান। জনতার বিক্ষোভের মুখে প্রতিবেশী দেশ মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পতনের পর ফিলিস্তিনে সরকার পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হলো।
মন্ত্রিসভার পদত্যাগের কিছুক্ষণ পর প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, আব্বাস আবারও ফায়েদকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করে তাঁকে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস সোমবার সালাম ফায়েদকে নতুন সরকার গঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট, পার্লামেন্ট ও পৌর নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে এই নতুন সরকার। এর আগে শনিবার মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন করতে চায়। এদিকে গাজার নিয়ন্ত্রণকারী হামাস তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচনের এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, মাহমুদ আব্বাসের কোনো বৈধতা নেই।
পরিকল্পনামন্ত্রী আলী জারবাবি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আজ (সোমবার) মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে, শিগগিরই নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে।’
পিএলওর ইয়াসের আবেদ রাব্বো সাংবাদিকদের বলেন, সামনের মাসগুলোতে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাহী কমিটি। তিনি বলেন, নির্বাচন সেপ্টেম্বরের মধ্যেই হবে।
এদিকে হামাস বলছে, আল-জাজিরার নথি ফাঁসের ঘটনা থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্য দিকে সরিয়ে নিতে নির্বাচনের ডাক দেওয়া হয়েছে। ফাঁস করা নথিপত্রে দেখানো হয়, ২০০৮ সালের শান্তি আলোচনার সময় ইসরায়েলকে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ বড় ধরনের ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল।
২০০৯ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট আব্বাসের ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু ক্ষমতার শূন্যতা এড়াতে নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়। হামাস ও ফাতাহর মধ্যে মতানৈক্যের কারণে ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে পরিকল্পিত নির্বাচন স্থগিত করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.