ইরানের আট কর্মকর্তার ওপর ওবামার নিষেধাজ্ঞা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গত বুধবার গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ইরানের শীর্ষস্থানীয় আটজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তর জানিয়েছে, ওই আটজন ইরানি কর্মকর্তার ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে, তাঁদের সম্পদও জব্দ করা হবে।
হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া সাম্প্রতিক ভাষণে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, মানবাধিকার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি নৈতিক বিষয়। তারা এর কার্যকারিতারও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। কাজেই ইরানে যারা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে, যুক্তরাষ্ট্র সব সময় তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াবে।
যেসব ইরানি কর্মকর্তার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তাঁরা হলেন: রেভল্যুশনারি গার্ডের কমান্ডার মোহাম্মদ আলী জাফরি, সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বর্তমানে কল্যাণ ও নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সাদেক মাহসুলি, গোয়েন্দা কর্মকাণ্ডবিষয়ক সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমানে প্রসিকিউটর জেনারেল গোলাম হোসেন মোহসেনি-এজেই, তেহরানের সাবেক প্রসিকিউটর জেনারেল সাঈদ মুরতাজাভি, গোয়েন্দা কর্মকাণ্ডবিষয়ক মন্ত্রী হায়দার মুসলেহি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুস্তাফা মোহাম্মদ নজর, জাতীয় পুলিশের উপপ্রধান আহমাদ রেজা রাদান ও গোয়েন্দাবিষয়ক উপপ্রধান হোসেন তায়েব।
এই আটজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ২০০৯ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কর্মীদের তাঁরা মারধর ও হত্যা করেছেন। নির্বাচনে ভোট গ্রহণের পর সরকারি হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে লাখ লাখ ইরানি নাগরিক গণবিক্ষোভে অংশ নেয়। ১৯৭৯ সালে সে দেশে সংঘটিত ইসলামি বিপ্লবের পর এই বিক্ষোভে সবচেয়ে বেশি লোকসমাগম ঘটে।
এ সময় ইরানি কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর অভিযান চালায়।
এ ঘটনায় বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও ইরানের বিরোধী দলগুলো সে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়ন ও হাজার হাজার ইরানিকে বিনা অভিযোগে আটক করার অভিযোগ তোলে। ঘটনার পরবর্তী ছয় মাসে কমপক্ষে ৪০ জন বিক্ষোভকারীকে হত্যা করা হয়।
ইরানের বিরোধী দলগুলোর দাবি, ইরানের নিরাপত্তারক্ষীরা ৭০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেন।

No comments

Powered by Blogger.