সবচেয়ে ছোট ইনিংস, সবচেয়ে বড় হার

বড় জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল তৃতীয় দিন বিকেলেই। কিন্তু সেটা এত বড় হবে, তা হয়তো ইংল্যান্ডও ভাবেনি। কাল দিনের প্রথম আধঘণ্টায় কোনো উইকেটই নিতে পারেনি ইংল্যান্ড। কিন্তু পরের ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ৭ উইকেট তুলে নিয়ে লাঞ্চের আগেই পাকিস্তানকে গুটিয়ে দিল তারা ৮০ রানে। জিতল ৩৫৪ রানে। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে উড়তে থাকা পাকিস্তান এক ধাক্কায় নেমে এল মাটিতে, হারল বেশ কিছু রেকর্ড গড়ে।
এই ৮০ রানের ইনিংসটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের সবচেয়ে ছোট ইনিংস। ৫৬ বছর আগে লর্ডসে করা ৮৭ রানই এত দিন ছিল সর্বনিম্ন। ৩৫৪ রানের পরাজয় রানের হিসেবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় পরাজয়, সব দেশ মিলিয়ে এই পরাজয় দ্বিতীয় বৃহত্তম। এই জয় আবার ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম। ১৯২৮ সালে ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬৭৫ রানের জয়টি শুধু ইংল্যান্ডের নয়, টেস্ট ইতিহাসেই রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় জয়।
প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও পাকিস্তানের মূল হন্তারক জেমস অ্যান্ডারসন। অতীতে ইংলিশ কন্ডিশনে সুইং বোলিংয়ের বিপক্ষে ভুগেছেন পাকিস্তানের অনেক বিখ্যাত ব্যাটসম্যান। সেখানে এই দলের ব্যাটিং লাইনআপ অনভিজ্ঞ সব নাম দিয়ে সাজানো। সহায়ক কন্ডিশনে সুইং বোলিংয়ের এক অপূর্ব প্রদর্শনীতে ৪৯তম টেস্টে এসে ক্যারিয়ারে প্রথম ১০ উইকেটের দেখা পেয়ে গেলেন অ্যান্ডারসন। আরও একবার পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের টেকনিকের দৈন্য দেখিয়ে দিয়েছেন চোখে আঙুল দিয়ে।
কাল প্রথম ৭ ওভার কাটিয়ে দিতে পেরেছিলেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ইমরান ফারহাত ও মোহাম্মদ আমির। অ্যান্ডারসনের সাপের মতো ছোবল দেওয়া এক বলে ফারহাতের আউটে বিপর্যয়ের শুরু, ৩ উইকেটে ৩১ থেকে মুহূর্তেই পাকিস্তান পরিণত হয় ৭ উইকেটে ৪১। পরপর দুটি চার দিয়ে শুরু করলেও গুল পারেননি প্রথম ইনিংসের পুনরাবৃত্তি করতে। দশে নামা কানেরিয়ার অপরাজিত ১৬ পাকিস্তানকে বাঁচিয়েছে সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার লজ্জা থেকে। কানেরিয়া ছাড়া দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন আর কেবল ফারহাত।
খেলা ছাড়ার পর থেকেই ধারাভাষ্য কক্ষে বসে পাকিস্তানের প্রায় সব খেলা দেখেছেন রমিজ রাজা। কালকের ব্যাটিং দেখার পর সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক ও ওপেনারের উপলব্ধি, ‘জঘন্য ব্যাটিং। এই ব্যাটিং পাকিস্তানের হূদয়ে ক্ষতের সৃষ্টি করবে।’ ক্ষত সারানোয় সালমান বাটের ভরসা সর্বশেষ সিরিজের ইতিহাস, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টেও অনেকটা এমনভাবে হেরেছিলাম। কিন্তু ভুলে যাবেন না, পরের টেস্টটাই আবার জিতেছিলাম।’ তবে এবার যে বাটদের কাজটা সহজ হবে না, তা জানিয়ে দিয়েছেন স্ট্রাউস, ‘বড় জয়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে ভালোভাবেই জানা আছে চার ম্যাচ সিরিজের এটি মাত্র প্রথম ম্যাচ।’ দ্বিতীয় টেস্ট শুরু আগামী শুক্রবার, এজবাস্টনে।

No comments

Powered by Blogger.