গুচ্ছবোমা নিষিদ্ধের চুক্তি কার্যকর

ক্লাস্টার বা গুচ্ছবোমার উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার বৈশ্বিক চুক্তি গতকাল রোববার থেকে কার্যকর হয়েছে। ‘কনভেনশন অন ক্লাস্টার মিউনিশনস’ নামের ওই চুক্তি গতকাল আন্তর্জাতিক আইনে পরিণত হয়। ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জার্মানিসহ মোট ১০৮টি দেশ প্রাথমিকভাবে এ আইনকে সমর্থন জানিয়েছে। এদের মধ্যে ৩৮টি দেশ এ আইন মেনে নেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করেছে। চুক্তি অনুযায়ী স্বাক্ষরকারী দেশগুলো নতুন করে গুচ্ছবোমা তৈরি করবে না এবং তাদের মজুদকৃত বোমাগুলো ধ্বংস করে ফেলবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও ইসরায়েলের মতো ক্ষমতাধর ও বিপুল পরিমাণে গুচ্ছবোমা উৎপাদনকারী কিছু দেশ চুক্তিতে সই করতে রাজি হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রে এ বোমার ব্যবহারকে তারা অবৈধ বলে মনে করে না। তাদের অস্ত্রভান্ডারে বর্তমানে ৮০ কোটির বেশি গুচ্ছবোমা মজুদ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে গুচ্ছবোমা নিষিদ্ধ করার জন্য প্রচারণা চালিয়ে আসছিল। সুশীল সমাজের প্রায় ২০০ সংগঠনের নেটওয়ার্ক ক্লাস্টার মিউনিশন কোয়ালিশনের প্রতিনিধি টমাস ন্যাশ এ নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ১০ বছর আগে ভূমিমাইন নিষিদ্ধ হওয়ার পর এটাই সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মানবাধিকার আইন।
গুচ্ছবোমা বিশেষ প্রক্রিয়ায় বানানো এক ভয়াবহ মারণাস্ত্র। অনেকগুলো অণুবোমা বা বোমব্লেটসমৃদ্ধ কনটেইনার বিমান থেকে ফেলে আকাশেই কনটেইনারে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বোমব্লেটগুলোর প্রতিটিই একেকটি আলাদা বোমা। কনটেইনার থেকে বোমব্লেটগুলো বিশাল এলাকাজুড়ে মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে। এগুলোর কিছু বিস্ফোরিত হয়। কিছু অবিস্ফোরিত হয়ে বছরের পর বছর ভূমিমাইনের মতো সক্রিয় হয়ে পড়ে থাকে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, যুদ্ধের সময় এ বোমা ব্যবহার করা হলেও যুদ্ধ শেষে বহু বছর পর্যন্ত এর কারণে নিরীহ মানুষ মারা যায়।

No comments

Powered by Blogger.