চীনের অর্থে শ্রীলঙ্কায় চালু হচ্ছে বন্দর, দিল্লির উদ্বেগ

চীনের অর্থায়নে তৈরি করা গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রথম অংশ শিগগিরই উদ্বোধন করতে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। আগামী নভেম্বর মাসেই বন্দরের প্রথম অংশ উদ্বোধনের ব্যাপারে আশাবাদী শ্রীলঙ্কার কর্মকর্তারা। শ্রীলঙ্কায় এই বিনিয়োগকে দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের কৌশলগত প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা হিসেবে দেখছে ভারত। শ্রীলঙ্কা ছাড়াও বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও পাকিস্তানে সমুদ্রবন্দর এবং নেপালে রেলওয়ে নির্মাণে চীন সহায়তা দিচ্ছে—এতে ভারতের উদ্বেগ বেড়ে গেছে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন।
কর্মকর্তারা বলেছেন, বিশ্বের ব্যস্ততম শিপিং লেনগুলোর অন্যতম শ্রীলঙ্কার ‘সিল্ক রোড’ বাণিজ্য রুটে হামবানতোতা নামের ওই বন্দরের প্রথম ধাপের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী নভেম্বরেই প্রথম অংশের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। সরকার আশা করছে ২০১৪ সালে দ্বিতীয় ধাপের কাজ শেষ হবে। এ বন্দর নির্মাণে চীন ৩০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বন্দরটি পুরোদমে চালু হলে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াবে শ্রীলঙ্কা। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পরিবহন খাতে এখানে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে।
শ্রীলঙ্কার বন্দর কর্তৃপক্ষের সভাপতি প্রিয়থ বিক্রম বলেছেন, হামবানতোতা বন্দরের প্রথম অংশ চালু হলে এখানে বছরে আড়াই হাজার কার্গো জাহাজ ভিড়তে ও ছাড়তে পারবে। দ্বিতীয় ধাপ শেষ হওয়ার পরবর্তী ১০ বছরের মধ্যে তাঁরা এ সংখ্যাকে আট হাজারে উন্নীত করতে চান।
এদিকে, দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের এই বিনিয়োগ-তত্পরতায় ক্রমশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে ভারত। ইউরেশিয়া গ্রুপের এশিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ মারিয়া কুসিসতো বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের তত্পরতা বাড়ার ফলে ভারত নিজেদের হুমকির সম্মুখীন হিসেবে বিবেচনা করছে। তিনি বলেন, এই বিনিয়োগ পদক্ষেপগুলোকে নয়াদিল্লি এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব বিস্তারে আকস্মিক আক্রমণ হিসেবে দেখছে এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে চীনকে হারিয়ে নিজেদের প্রভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছে।

No comments

Powered by Blogger.