আছেন মুরালির রক্ষাকর্তাও

মহানায়কের বিদায়কে স্মরণীয় করতে চেষ্টার কমতি রাখেনি ক্রিকেট শ্রীলঙ্কা। ‘মুরালি-বিদায় সংবর্ধনা’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা দেখভাল করছে সব আয়োজন। মুত্তিয়া মুরালিধরন নিজে বিদায়ী টেস্টে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধুকে। এই ভাগ্যবানদের একজন মানদ্বীপ সিং ধিলন। পেশায় অর্থোপেডিক সার্জন, এখন ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব স্পোর্টস মেডিসিনের লিয়াজোঁ কমিটির চেয়ারম্যান। মুরালির জন্য তিনি বন্ধুর চেয়ে বেশি কিছু। মানদ্বীপ সিং না থাকলে হয়তো চাকিংয়ের কলঙ্ক মাথায় নিয়ে বছর ছয়েক আগেই ক্রিকেট ছাড়তে হতো মুরালিকে।
২০০৩ সালে অ্যাপোলো হাসপাতালের চাকরি নিয়ে কলম্বো গিয়েছিলেন ধিলন। এ সময় আড়াই বছর কাজ করেছেন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ‘স্পোর্টস ইনজুরি উপদেষ্টা’ হিসেবে। বল ছোড়া নিয়ে ওই সময়ই আইসিসির পরীক্ষা-নিরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছিল মুরালিকে। ধিলনের তৈরি করে দেওয়া বিশেষ এক ধরনের বর্ম পড়েই আইসিসির পরীক্ষাগারে ‘পাস’ মার্ক পেয়ে যান মুরালি। ডেইলি মিররকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের সেই সময়ের স্মৃতিচারণা করেছেন চিকিৎসক মানদ্বীপ, ‘বোলিংয়ের সময় মুরালির বাহুর ওপরের দিকে এবং কবজিতে বাড়তি একটু ঝাঁকি লাগে। এই কারণেই খোলা চোখে মনে হয় সে বল ছুড়ছে। হতে পারে, এটা এক ধরনের দৃষ্টিবিভ্রম। আমি এটাকে (বাড়তি ঝাঁকি) সৌভাগ্য বা সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ কিংবা বিকলাঙ্গতা বলব না। এটা মুরালির জন্মগত, তাঁর বোলিং নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি এ জন্যই।’
ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে কাজের সময় মুরালির সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় মানদ্বীপকে। মুরালিকে খুব কাছ থেকে দেখে একটি বর্ম তৈরি করে দেন তিনি, যে বর্ম প্রমাণ করে, জন্মগত ওই সমস্যা বাড়তি কোনো সুবিধা দিচ্ছে না মুরালিকে। এরপরই আইসিসি চূড়ান্ত বৈধতা দেয় মুরালির অ্যাকশনকে। মানদ্বীপকে তাই বলা যায় মুরালির রক্ষাকর্তা। পেশাগত ব্যস্ততার জন্য গল টেস্টের প্রথম দিনটায় অবশ্য থাকতে পারেননি মানদ্বীপ। তবে উপস্থিত থাকার কথা বাকি চার দিনই।
শুধু মুরালির নয়, এই ভদ্রলোকের কাছে অনেক ঋণ তো ক্রিকেটেরও। তিনি না থাকলে ক্রিকেট নিশ্চিতভাবেই বঞ্চিত হতো স্পিন-জাদুকরের অবিশ্বাস্য সব কীর্তি থেকে!

No comments

Powered by Blogger.