মালদ্বীপে মন্ত্রিসভার পদত্যাগের পর রাজনৈতিক অচলাবস্থা

প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিরোধী দলের মধ্যে দ্বন্দ্বে মালদ্বীপে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদের পদত্যাগের পর মূলত কার্যকর কোনো সরকার ছাড়াই গতকাল বুধবার অতিবাহিত করেছে দ্বীপরাষ্ট্রটি।
প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ ও বিরোধী দলের মধ্যে দ্বন্দ্বে মঙ্গলবার দেশটির ১৩ সদস্যের মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করে। ৭৭ আসনের পার্লামেন্ট মজলিশে প্রেসিডেন্ট নাশিদের দল মালদ্বীপের ডেমোক্রেটিক পার্টির (এমডিপি) ৩২টি আসন রয়েছে। বিরোধী দল মালদ্বীপের পিপলস পার্টির (ডিআরপি) আসন রয়েছে ৪০টিরও বেশি।
প্রেসিডেন্ট নাশিদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘পার্লামেন্টে সমস্যার সমাধান না করে প্রেসিডেন্টের মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণা করে কোনো লাভ নেই। আমরা রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে আছি।’
মন্ত্রিপরিষদের পদত্যাগের পর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট নাশিদ বলেন, পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে বিরোধী দল সরকারের কাজে বাধা দিচ্ছে। বেসরকারিকরণ প্রকল্পসহ সরকারের অসংখ্য উদ্যোগে বাধা দিয়েছে তারা। তিনি আরও বলেন, মন্ত্রিসভার সদস্যদের কাজেও বাধা দেওয়া হয়েছে। বিরোধীদের এমন আচরণকে সংবিধান পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তবে ডিআরপির মুখপাত্র মোহাম্মদ শরিফ বলেন, ‘পার্লামেন্টে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। পার্লামেন্টের মাধ্যমে দেশের জন্য ক্ষতিকর কোনো কিছুই আমরা হতে দেব না।’
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকারে প্রেসিডেন্টের সংসদ বিলুপ্ত করার ক্ষমতা নেই। আবার এই মুহূর্তে পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্টকে ইমপিচমেন্ট করার মতো দুই তৃতীয়াংশ আসনও নেই বিরোধী দল ডিআরপির। এদিকে প্রেসিডেন্টের হাতে মন্ত্রী নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা থাকলেও পরে তা পার্লামেন্টে অনুমোদিত হতে হয়। পরে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে মন্ত্রীকে অপসারণও করা যায়। বর্তমান পার্লামেন্টে বিরোধী দল সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার কারণে প্রেসিডেন্ট ও বিরোধী দলের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরেই দেশটিতে বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার দেশটির শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা করেছিল ডিআরপি। এই তৎপরতার আগেই মঙ্গলবার দেশটির মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করে।

No comments

Powered by Blogger.