দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় ভারত আন্তরিক নয়: কোরেশি

পকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ক্ষেত্রে আন্তরিক নয় ভারত। গতকাল শুক্রবার রাজধানী ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। আগের দিন বৃহস্পতিবার পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পর এই মন্তব্য করলেন কোরেশি। বৈঠকে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে দুই পক্ষই আলোচনা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে একমত হয়েছে।
আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ার জন্য ভারতকে দায়ী করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নয়াদিল্লি আলোচনার ক্ষেত্র সীমিত করে রেখেছে, যা কোনোভাবেই ইসলামাবাদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। ভারতের গুরুত্ব দেওয়া বিষয়গুলোর প্রতি যদি আমরা বেশি নজর দিই এবং পাকিস্তানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে অবহেলা করি, তাহলে আমার মনে হয় না আলোচনায় খুব বেশি অগ্রগতি হবে।’ বৃহস্পতিবারের আলোচনা অচলাবস্থার মধ্যে শেষ হয়েছে—এমন কথাও বলতে রাজি নন তিনি।
কোরেশি বলেন, ‘বৈঠকে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয় উত্থাপন করেছে ভারত। আমরা তাদের বলেছি, বাছাই করা বিষয় নিয়ে এভাবে আলোচনা হতে পারে না। আমরা ভারতের উদ্বেগের বিষয় বুঝতে পেরেছি, এ ব্যাপারে আমরা আলোচনায় আগ্রহী। কিন্তু পাকিস্তানেরও কিছু উদ্বেগের বিষয় রয়েছে এবং জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি আলোচনার বাইরে রাখা সম্ভব নয়।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন কোরেশি ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণা। আলোচনা দীর্ঘ হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের ছয় ঘণ্টা পর সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে কৃষ্ণা বলেন, ‘মুম্বাই হামলার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে আটক মার্কিন নাগরিক ডেভিড কোলম্যান হেডলির তথ্যের ভিত্তিতে পাকিস্তান সরকার পদক্ষেপ নেবে—এমন আশ্বাস নিয়েই দিল্লি ফিরছি আমি।’ তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে মুম্বাই হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের মুখোশ উন্মোচন করলে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে দুই পক্ষের মধ্যে আস্থা তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অগ্রগতি হবে।’
কৃষ্ণা বলেন, ‘বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখার ব্যাপারেও একমত হয়েছি আমরা।’ কোরেশিকে নয়াদিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি।
কোরেশি বলেন, ‘আলোচনায় ভারতীয় পক্ষ অনেকটাই অনড় অবস্থানে ছিল। তারা আলোচনার গণ্ডি সীমিত রাখে।’ পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) মুম্বাই হামলার সমন্বয় করেছে—ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সে দেশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের এমন মন্তব্যেরও সমালোচনা করেন তিনি। দুই দেশের এই বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে দুই দেশের পত্রপত্রিকাতেই বৈঠক নিয়ে হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.