বিশ্বকাপ জিততে হলে

সতীর্থরা বন্ধু হোক
আমাদের এত ভালো দল হয়ে ওঠার মূল কারণ ছিল, দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। আমাদের মধ্যে কোনো ঈর্ষা ছিল না, কারও মধ্যে ইগো ছিল না, সবার মধ্যে ছিল দারুণ বন্ধুত্ব। সেই মনোভাবটাই আমরা মাঠে নিয়ে যেতাম।
ভালো ফর্মে থাকো, কিন্তু উদ্ধত হোয়ো না
বিশ্বকাপের আগে আমরা যে ম্যাচগুলো খেলেছিলাম, সেসবের ফল দেখলে দেখবেন; আমরা পোল্যান্ড, স্পেন ও চেকোস্লোভাকিয়ার মতো দলের বিপক্ষে ওদের দেশে গিয়ে জিতে এসেছি। এদের মধ্যে চেকোস্লোভাকিয়া ছিল আগের বিশ্বকাপের রানার্সআপ। আমরা ছিলাম কঠিন লড়াইয়ে পোড়-খাওয়া সৈনিক, উদ্দীপিত এবং অভিজ্ঞ। আদর্শ প্রস্তুতি বলতে যা বোঝায়, এটি ছিল তা-ই। বিশ্বকাপ শুরুর আগে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, কিন্তু কখনোই বলিনি যে, আমরা তা জিততে যাচ্ছি। এটা এমন কঠিন একটা টুর্নামেন্ট যে, কোনো দলের পক্ষেই আগে ঘোষণা দিয়ে জেতা সম্ভব নয়। আলফ্ (ম্যানেজার আলফ্ র‌্যামসে) বলেছিলেন, আমরাই জিতব, তবে আমার তাঁকে সিরিয়াস বলে মনে হয়নি। বরং ভেবেছিলাম, আমাদের উদ্দীপিত করতে অমন বলেছেন।
কোচকে সম্মান কোরো
আলফ্ র‌্যামসে ছিলেন প্রচণ্ড কড়া। মাঠে ও মাঠের বাইরে তিনি যা করতে বলতেন, ঠিক তাই করতে হতো। নইলে দল থেকে পত্রপাঠ বিদায় করে দিতেন তিনি। আলফ্ আর ফ্যাবিও ক্যাপেলোর মধ্যে অনেক মিল আছে। খেলোয়াড়েরা তাদের রুমে ফেরার আগ পর্যন্ত মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করে, ওয়াগদের (ওয়াগ—ওয়াইফ অ্যান্ড গার্লফ্রেন্ড-এর সংক্ষিপ্ত রূপ) উপস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে ভালো করেছেন ক্যাপেলো।
মনঃসংযোগটাই চাবিকাঠি
বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ম্যাচে লম্বা সময় আমার কিছু না করেই কেটেছে। এই সময়ে একটু উদাসীন হয়ে পড়াটা তাই খুব স্বাভাবিক হতো। তবে ভালো আন্তর্জাতিক গোলরক্ষক হওয়ার পূর্বশর্ত হলো ৯০ মিনিটই খেলায় মনোযোগ ধরে রাখা। যাতে হঠাৎ করে প্রতিপক্ষের কোনো খেলোয়াড় সামনে উদয় হলেও আপনাকে হকচকিয়ে যেতে না হয়। বিশ্বকাপটা গোলরক্ষকদের জন্য বিশেষ ধরনের একটা চাপ। কারণ একটা ভুল করলেই হলো, সেটি বিশ্বজুড়ে টিভিতে বারবার দেখানো হবে। যদি ভুল হয়েই যায়, সেটিকে ভুলে যেতে হবে। ওই ভুল নিয়েই ভাবতে থাকলে সেটি পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে।

No comments

Powered by Blogger.