প্রেসিডেন্ট হলে ওবামাকে মন্ত্রিসভায় নিতেন হিলারি

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, তিনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হতে পারতেন, তাহলে তিনি বারাক ওবামাকে তাঁর মন্ত্রিসভায় স্থান দিতেন। গত নভেম্বর মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বারাক ওবামার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন হিলারি ক্লিনটন। ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হিসেবে হিলারি ক্লিনটনেরই রিপাবলিকান প্রার্থী জন ম্যাককেইনের বিপক্ষে লড়ার সম্ভাবনা ছিল বেশি। কিন্তু বারাক ওবামা তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর ক্যারিশমায় অনেকটা অভাবিতভাবেই হিলারি ক্লিনটনকে পেছনে ফেলে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন লাভ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল এবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে হিলারি ক্লিনটন বর্ণনা দেন, কীভাবে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাব দেন। বারাক ওবামার জায়গায় হিলারি প্রেসিডেন্ট হলে ওবামাকে এ রকম একটি প্রস্তাব দিতেন কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘অবশ্যই, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর কাকে কোন মন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় নেওয়া হবে, এ বিষয়ে হিলারি ক্লিনটন কিছুই জানতেন না বলে মন্তব্য করেন। বরং তিনি পুনরায় নিউইয়র্কের সিনেটর হিসেবে সিনেট হাউসে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারেই মানসিকভাবে তৈরি ছিলেন বলে জানান। তাঁকে কখন কীভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করার প্রস্তাব বারাক ওবামা দিলেন, সেই মুহূর্তের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে হিলারি ক্লিনটন বলেন, ‘সেদিন আমি বিলের (সাবেক প্রেসিডেন্ট) সঙ্গে হাঁটছিলাম। হঠাত্ আমার মোবাইল ফোনে একটা কল এল, দেখি বারাক ওবামা স্বয়ং আমাকে ফোন করেছেন। তিনি ফোনে আমাকে শিকাগোতে তাঁর প্রশাসন গঠন নিয়ে একটি বৈঠকে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। আমি পরের দিনই শিকাগোতে সেই বৈঠকে যোগ দিই। শিকাগোতে ওবামা আমাকে সরাসরিই পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তাঁর আসন্ন মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন।’ এ প্রস্তাবে অবাক হয়েছেন কি না, জানতে চাইলে হিলারি ক্লিনটন বলেন, ‘অবশ্যই আমি অবাক হয়েছি। প্রথমে আমি ভদ্রতা করেই ‘না’ বলেছিলাম। কিন্তু সত্যি বলতে কি, ওবামা আমাকে এই প্রস্তাব করায় আমি খুশিই হয়েছিলাম।’ তবে সরল স্বীকারোক্তির এক পর্যায়ে হিলারি ক্লিনটন বলেন, ‘যখন দেশের প্রেসিডেন্ট স্বয়ং আপনাকে কোনো প্রস্তাব দেবেন, তখন তাতে ‘না’ বলার তেমন কোনো যুক্তি আপনার হাতে থাকবে না।’
হিলারি ক্লিনটন মনে করেন, গণতন্ত্র আসলে এমনই। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। গণতন্ত্রে অনেক সময় প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে পরম সুহূদ, সহকর্মী। বারাক ওবামার মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের মেয়াদ শেষ করার পর আবারও হোয়াইট হাউসের সর্বোচ্চ পদটির আকাঙ্ক্ষা রয়েছে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে হিলারি ক্লিনটন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, তাঁর এ ব্যাপারে কোনোই আগ্রহ নেই।

No comments

Powered by Blogger.