‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে শেষ ইজতেমার প্রথম পর্ব

ইহকালে শান্তি ও পরকালের মাগফেরাত এবং বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি, সংহতি কামনায় শেষ হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। গুনাহ মাফ ও আত্মশুদ্ধির আশায় ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে রাজধানীর উপকণ্ঠের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীর। ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়ে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে রহমত ও হেদায়েত প্রার্থনা করেন।

আজ রোববার বেলা ১০টা ৪০ মিনিটে শুরু হওয়া আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাদেশের কাকরাইল মসজিদের মাওলানা হাফেজ মোহাম্মদ জোবায়ের। ১১টা ১৫ মিনিটে মোনাজাত শেষ হয়।

আখেরি মোনাজাতের আগে হেদায়তি বয়ানও বাংলায় করেন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল মতিন। এবার আখেরি মোনাজাত ও হেদায়তি বয়ান দুটোই হয় বাংলায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানী ঢাকায় গণভবনে বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া মন্ত্রী ও এমপিসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনৈতিক মিশনের সদস্য এবং পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।

ইজতেমার ময়দানের বাইরে অবস্থানকারী মুসল্লি ও এলাকাবাসীকে মোনাজাতে শরিক হতে গাজীপুর ও ঢাকা জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে শতাধিক মাইকের সংযোগ দেয়া হয়। যারা ভিড়ের কারণে মূল ময়দানে যেতে পারেননি তারা সড়কে মোনাজাতে অংশ নেয়। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে দেশবাসী মোনাজাতে অংশ নেয়।

এসময় মহান আল্লাহ পাকের অশেষ মহিমায় আবেগাপ্লুত হন লাখো মুসল্লি। অশ্রুসিক্ত নয়নে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণে ব্যাকুল হয়ে পড়েন তারা।

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে আমেরিকা, সৌদি আরব, ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, লেবানন, ফিলিপাইন, আফগানিস্তান, থাইল্যান্ড, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের ৮৫টি দেশের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বিদেশি মুসল্লি অংশ নিয়েছেন।

দেশি-বিদেশি মুসল্লিদের নিরাপত্তায় সাদা পোশাকে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া রাস্তাঘাট, ব্যস্ততম এলাকাসহ পুরো ইজতেমা ময়দান আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছেন। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে পুরো ইজতেমা ময়দানকে ৮ স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৭ হাজার পুলিশ ইজতেমা মাঠে মোতায়েন রয়েছে। যা গেলো বারের চেয়ে ১৫শ’ বেশি।

আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে মুসল্লিদের সুবিধার্থে ১৯টি বিশেষ ট্রেন চলাচল করে। এছাড়া সব আন্তঃনগর ট্রেন টঙ্গীতে যাত্রাবিরতি করে। পাশাপাশি বিআরটিসি দুই শতাধিক স্পেশাল বাস সার্ভিস চালু করে। আখেরি মোনাজাতের দিন ছাড়াও ইজতেমা চলাকালীন টঙ্গী স্টেশনে দ্রুতযানসহ প্রতিটি ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে বলে রেলওয়ে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়।

আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় ধাপের তিন দিনব্যাপী ইজতেমা শুরু হবে। একইভাবে ২১ জানুয়ারি দুপুরে সকল মানুষের সুখ, শান্তি, কল্যাণ, অগ্রগতি, ভ্রাতিত্ববোধ ও মঙ্গল কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।

No comments

Powered by Blogger.