শেরেবাংলা নগরের সড়ক উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের অধিকাংশ রাস্তাই বেহাল দশা। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে জনদুর্ভোগ। এ অবস্থা থেকে অফিসগামী ও সাধারণ মানুষদের মুক্তি দিতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য ‘ঢাকার শেরেবাংলা নগর প্রশাসনিক এলাকার ই এবং এফ ব্লকের বিভিন্ন রাস্তার নির্মাণ কাজ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণলয়। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি নিয়ে আগামী রোববার প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রাস্তার মালিকানা কার অর্থাৎ গণপূর্ত অধিদফতর নাকি ঢাকা সিটি কর্পোরশেন- তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় যেসব রাস্তা নির্মাণ বা সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে সেগুলোর মালিকানার বিষয়ে প্রকল্পের পটভূমিতে উল্লেখ থাকা প্রয়োজন ছিল। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ঢাকা শহরে সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এ ধরনের রাস্তা সিটি কর্পোরেশনের মেরামত বা সংস্কার করার কথা। তবে প্রকল্পের আওতাভুক্ত রাস্তাগুলোর মালিকানা/মালিকানা হস্তান্তর/শুধু রাস্তা মেরামত ও সংস্কার নিয়ে গণপূর্ত অধিদফতর এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে বলে মনে করছে পরিকল্পনা কমিশন। কেন না, এ বিষয়ে অনেক চিঠি চালাচালি হয়েছে বলে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পর্যালোচনা করে প্রতীয়মান হয়েছে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শেরেবাংলা নগরে গণপূর্ত অধিদফতরের আওতাধীন রোকেয়া সরণি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে মিরপুর রোড গণভবন সংযোগ স্থল পর্যন্ত পূর্ব-পশ্চিম সংযোগ সড়ক দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োজিত সদস্যরা এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, গণভবনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আগত ভিআইপিরা যাতায়াত করে থাকেন। শেরেবাংলা নগর মহাপরিকল্পনায় প্রশাসনিক এলাকায় ই ব্লকের স্থাপত্য অধিদফতরের প্রণীত অনুমোদিত নকশায় চিহ্নিত প্লটগুলো গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণায় বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে বরাদ্দ দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ন্যাশনাল লাইব্রেরি অ্যান্ড আর্কাইভ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ইমাম প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট, সার্ক মেট্রোলোজিক্যাল রিসার্চ সেন্টার, বাংলাদেশ বেতার, পরিবেশ অধিদফতর, এনজিওবিষয়ক ব্যুরো, নির্বাচন কমিশন, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, এলজিইডি ইন্সটিটিউট, পাবলিক সার্ভিস কমিশনসহ বিভিন্ন সংস্থা তাদের প্রধান কার্যালয় বা ভবন নির্মাণ করে দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া এফ ব্লকের নকশা অনুযায়ী বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- কর ভবন, নিউরোসাইন্স হাসপাতাল, প্রতœতত্ত্ব ভবন, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর, বাংলাদেশ ফ্লিম আর্কাইভ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, জিটিসিএল ভবন, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতাল, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ইএনটি হাসপাতাল, এসপি অফিসসহ বিভিন্ন সংস্থা তাদের প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ দেশি-বিদেশী ভিআইপিরা শেরেবাংলা নগরের রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকলল্পনা কমিশনে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, ২০ জুন পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা প্রকল্প এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেন। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পাশে ২৩০ দশমিক ২৮ মিটার রাস্তা অক্ষত অবস্থায় দেখতে পান। ফলে এ অংশটি প্রকল্প থেকে বাদ দেয়ার সুপারিশ করেছেন। এছাড়া মাহবুব মোর্শেদ সড়ক (আগারগাঁও-শ্যামলী) থেকে পিএসসির শেষ প্রান্ত পর্যন্ত সড়কটি ১৫০ ফুট প্রশস্ততায় নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু ব্যস্ততম এ সড়কটি ১০০ ফুট প্রশস্ত রয়েছে। এর প্রশস্ততা হ্রাস করা যেতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.