ইসি কর্মকর্তাদের বড় রদবদলে ক্ষুব্ধ কমিশনাররা

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ৫ জন আঞ্চলিক কর্মকর্তা, ১৮ জন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ ৩৩ জনের বদলির বিষয়টি জানতেন না নির্বাচন কমিশনাররা। অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে ইসি সচিবালয় বদলির আদেশ জারি করেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ নির্বাচন কমিশনাররা। বুধবার এ নিয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকও করেছেন চার কমিশনার। এ বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনারের কাছে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ইসি সচিব ও অতিরিক্ত সচিব। আজ (বৃহস্পতিবার) আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হতে পারে। মঙ্গলবার বদলি প্রক্রিয়ার বিষয়টি জানতে চেয়ে নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রশাসনিক কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার ও ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে একটি চিঠি (ইউনোট) দিয়েছেন। সোমবার বদলির এ আদেশ জারি করা হয়। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। একাধিক কমিশনারের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, মাঠ প্রশাসনে একসঙ্গে এত বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তার বদলি ও চলতি দায়িত্ব দেয়ার ঘটনাটি তাদের নজরেই আনা হয়নি। এর আগেও কমিশনারদের অবহিত না করে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিষয়গুলো তাদের জন্য অবমাননাকর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কমিশনার বুধবার রাতে যুগান্তরকে বলেন, এটিকে ইস্যু করে বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এখন বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করল। এভাবে কমিশনের কার্যক্রম চলতে পারে না। এতে কমিশন বিতর্কিত হয়ে পড়তে পারে। যোগাযোগ করা হলে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বুধবার যুগান্তরকে বলেন, বদলি আদেশ জারির বিষয়টি আগে জানতাম না। কোন প্রক্রিয়ায় রদবদল হল তা জানতে চিঠি দিয়েছি। এটি কমিশনের একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয়। নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বদলির বিষয়ে আমি জানি না। নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম বলেন, প্রশাসনিক কমিটিতে আমি নেই। বিষয়টিও সেনসেটিভ। এ বিষয়ে মন্তব্য করব না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার সম্মতি নিয়ে ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বদলির আদেশ অনুমোদন করেছেন। এটি কমিশন সচিবালয়ের রুটিন কাজ। বড় ধরনের বদলির বিষয়টি চার কমিশনারের নজরে আনলে বিতর্ক হতো না। তারা বলেন, আগেও বিভিন্ন বিষয়ে চার কমিশনারকে না জানিয়ে ইসি সচিবালয় থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। চোখের আইরিশ ও আঙ্গুলের ছাপ ছাড়াই স্মার্টকার্ড দেয়ার প্রস্তাব তৈরি করেছিল ইসি সচিবালয়। ওই ঘটনায়ও ক্ষুব্ধ হন কমিশনাররা। মাহবুব তালুকদার ইউনোটে উল্লেখ করেন, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় দেখতে পেলাম দেশব্যাপী নির্বাচন কমিশনের অধীনস্থ অফিসারদের বদলি ও পদোন্নতি (চলতি দায়িত্ব) প্রদান করা হয়েছে। এ বিষয়ে অফিসারদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার কথা পত্রিকায় ওঠে এসেছে। এতে কমিশনের কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এবং ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করি। বিষয়টি আমাকে কিছুটা বিস্মিত করেছে। এ নিয়ে বুধবার নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের কক্ষে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন চার কমিশনার। দুপুরে মাহবুব তালুকদারের সঙ্গে বৈঠক করেন নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেসুর রহমান। সেখানে বদলির যৌক্তিকতা ও কমিশন সচিবালয়ের কার্যপরিধি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, ইউনোট (আনঅফিসিয়াল নোট) আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।

No comments

Powered by Blogger.