৬৬ বছর পর নাম বদলের উদ্যোগ

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নারুয়ায় অবস্থিত পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নামীয় লিয়াকত আলী স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের নাম ৬৬ বছর পর পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু কলেজ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ম্যানেজিং কমিটির সভায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হয়েছে। নারুয়া লিয়াকত আলী স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সিরাজুল হক জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ কলেজের নাম পরিবর্তনের জন্য প্রস্তাবনা আসছে। এজন্য নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়া করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত নাম পরিবর্তনের কোন অনুমতি আসেনি। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও ইউপি সদস্য আবজাল হোসেন জানান, ম্যানেজিং কমিটির সভায় লিয়াকত আলী স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু কলেজ নামকরণ করার প্রস্তাবনা এসেছে। ম্যানেজিং কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে নাম প্রস্তাব পাঠানোর জন্য। লিয়াকত আলী স্মৃতি স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এইচ এম রকিব হায়দার জানান, নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সাল। সবেমাত্র ভারত উপমহাদেশ ভেঙ্গে ‘‘পাকিস্থান’’ ও ‘‘হিন্দুস্থান’’ এর গোড়াপত্তনের মাত্র তিন বৎসরকাল অতিক্রান্তের পথে। আকস্মিকভাবেই তৎকালীন পাকিস্থানের প্রধান মন্ত্রী ‘‘কায়দে-মিল্লাত লিয়াকত আলী খান’’ আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। সে কারণে পাকিস্থান ব্যাপী শোক পালন চলছিল। এরই প্রেক্ষিতে নারুয়া ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্র নারুয়া বাজারের বটতলায় বসে শোক সভা। সভার সমাপনীতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, এখানে ‘লিয়াকত আলী মেমোরিয়াল হাই স্কুল’ নামে একটি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হোক। দলমত নির্বিশেষে উপস্থিত জনতা এ প্রস্তাবে অত্যন্ত আনন্দিত হয়। নারুয়া বাজার তৎকালীন বালিয়াকান্দি থানার অত্যন্ত প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র হিসাবে ছিল পরিচিত। দক্ষিন-পশ্চিম দিক দিয়ে প্রবাহিত গড়াই নদী। আর মূল বাজার সংলগ্ন একটি মরা নদী, নাম ‘চিত্রা’। প্রায় আয়তাকার নারুয়া ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্রে ‘নারুয়া বাজার’ সেদিন ছিল খুবই জমজমাট। গড়াই নদীর অপর পাড়ে দক্ষিণ দিকে তখন যশোহর জেলা বর্তমান শ্রীপুর উপজেলা। তারপরই ১৯৫১ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরে কলেজে রুপান্তরিত হয়।

No comments

Powered by Blogger.