জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ে সবার সর্বাত্মক সহযোগিতার আহ্বান

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সশস্ত্র বাহিনীসহ সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসে শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে গতকাল বুধবার আয়োজিত ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) ২০১৬-১৭ কোর্সের গ্র্যাজুয়েশন প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার চায় না, দেশে এমন কিছু ঘটুক, যাতে চলমান উন্নয়নে কোনো প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। তিনি আরও বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপীই একটি উদ্বেগজনক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে সরকার জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরও এই গণসচেতনতা সৃষ্টির কাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সমাজের সর্বস্তরের জনগণের প্রতিও নিজ নিজ সন্তানের দিকে খেয়াল আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও আমাদের নৌবাহিনীর সাবমেরিন ছিল না। সম্প্রতি অত্যাধুনিক সাবমেরিন নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়ে আমাদের সক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী এখন ত্রিমাত্রিক বাহিনী। ফোর্সেস গোল ২০৩০-এর আওতায় একইভাবে সেনা ও বিমানবাহিনীকে চৌকস ও পেশাদারি করে তোলা হয়েছে এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি যুক্ত করা হয়েছে। বিমানবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে এফ-৭ বিজি যুদ্ধবিমানসহ হেলিকপ্টার ও অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র। সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নে নতুন ট্যাংক,
এপিসি, সেল্ফ প্রোপেলড আর্টিলারি গান সংযোজনের পাশাপাশি ট্যাংক বিধ্বংসী মিসাইলের পরিচালনায় পারদর্শিতা, মেইনটেন্যান্স কাজে পেশাদারি ও সেনাবাহিনীর সক্ষমতা আরও বাড়ানো হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুরু থেকে এ পর্যন্ত স্টাফ কলেজে সেনাবাহিনীর ৪১টি, নৌবাহিনীর ৩৫টি এবং বিমানবাহিনীর ৩৭টি স্টাফ কোর্স সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি বন্ধুপ্রতিম দেশের ৯৯৮ জন কর্মকর্তাও এ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি অর্জন করেছেন। নবীন গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের দিনটি নিঃসন্দেহে আপনাদের জীবনের অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য একটি দিন। কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে আজ আপনারা সমরবিজ্ঞানের ওপর উচ্চতর জ্ঞান লাভ করেছেন। আমার বিশ্বাস, এ প্রশিক্ষণ অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালনে এবং যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আপনাদের আরও আত্মপ্রত্যয়ী হতে শেখাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এ বছর ১৪ জন নারী কর্মকর্তা গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন।’ এর আগে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ডিএনসিএসসির ২০১৬-১৭ কোর্সের গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন। এ বছর ২৮০ জন কর্মকর্তা গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর ১৫৮ জন, নৌবাহিনীর ২৭ জন, বিমানবাহিনীর ২৪ জন এবং ৭১ জন বিদেশ থেকে আসা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সাংসদ, তিন বাহিনীর প্রধানেরা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কূটনীতিকেরা, উচ্চপর্যায়ের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.