প্রচারণায় সরগরম অলিগলি

পোস্টারে ছেয়ে গেছে পৌর শহর। সকাল-সন্ধ্যা ভোটারের দ্বারে প্রার্থী। চায়ের কাপে, আড্ডায় আলোচনার ঝড়—কোন প্রার্থী পৌরবাসীর কল্যাণে বেশি ভূমিকা রাখবেন, চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এ চিত্র বাঘাইছড়ি পৌর এলাকার। পৌর নির্বাচন ঘিরে এখন প্রচারণায় সরগরম অলিগলি। এটি বাঘাইছড়ি পৌরসভার দ্বিতীয় নির্বাচন। ২০১২ সালে ৮ জানুয়ারি প্রথম নির্বাচন হয়। এতে মেয়র নির্বাচিত হন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল সমঅধিকার –সমর্থিত প্রার্থী মো. আলমগীর কবির।
নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, ১৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন—আওয়ামী লীগ প্রার্থী জেলা কমিটির সদস্য মো. জাফর আলী খান, বিএনপির প্রার্থী উপজেলা কমিটির সভাপতি মো. ওমর আলী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আজিজুর রহমান। তবে কোনো আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল প্রার্থী দেয়নি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, মনোনয়ন নিয়ে দুই দলেই অসন্তোষ বিরাজ করছে। শেষ পর্যন্ত দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় দলের সব নেতা-কর্মী নামবেন কি না, এ নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে প্রার্থীদের আশা শেষ পর্যন্ত দলীয় প্রতীকের জন্য হলেও কেউ বিরোধিতা করতে পারবেন না। বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী মো. ওমর আলী বলেন, ‘আমাদের দলীয় কোন্দল এখন ধীরে ধীরে কমে আসছে। আমি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রচারণা করছি। এখানে যাঁরা ক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা ধানের শীষ প্রতীকের সমর্থনকারী। আমাকে পছন্দ না হলেও তাঁরা অবশ্যই ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেবেন।’ আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী মো. জাফর আলী খান দাবি করেন, ‘কোনো দলীয় কোন্দল নেই। তবে মনোনয়ন না পাওয়ায় একজনের একটু ক্ষোভ ছিল। আমাদের জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের হস্তক্ষেপে তিনিও আমার পক্ষে প্রচারণা করছেন। আশা রাখছি এবার নৌকা প্রতীক জয়ী হবে।’ ২ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে পৌর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মেয়র প্রার্থীরা নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। ওই দিন বেলা তিনটা থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. জাফর আলী খান পশ্চিম লাইল্যা ঘোনা, মুসলিম ব্লক, মাস্টারপাড়া ও বাঘাইছড়ি গ্রামে গণসংযোগ করেন। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী মো. ওমর আলী ওই দিন প্রচারণা চালান গুচ্ছগ্রাম, এফ ব্লক,
চৌমুহনী ও মাদ্রাসাপাড়ায়। বাঘাইছড়ি গ্রামের ভোটার বিপিনি চাকমা ও মাদ্রাসাপাড়ার ভোটার মো. আবদুল কমির বলেন, ‘গত নির্বাচনে বড় দুই দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের সুযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়। এবারও দেখা যাচ্ছে দুই দলের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী হয়। তবে আমরা চাই এলাকার উন্নয়ন। যিনি এতে ভূমিকা রাখবেন, তাঁকেই বেছে নেওয়া হবে।’ নির্বাচনের মূল আলোচনা মেয়র প্রার্থীদের ঘিরে হলেও কাউন্সিলর প্রার্থীরাও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তাঁরা প্রচারণা চালাচ্ছেন সমান তালে। নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫ জন ও সংরক্ষিত আসনে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বাঘাইছড়ি পৌরসভার ভোটারসংখ্যা রয়েছে ১০ হাজার ১৭৭। গত ৮ জানুয়ারি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জমির উদ্দিন বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দেশে ওই দিনে কোথাও নির্বাচন হচ্ছে না। সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্য কর্মকর্তার সংকট থাকবে না। এখন পর্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে প্রচারণা চলছে।

No comments

Powered by Blogger.