সরকার নির্বিকার থাকতে পারে না

২০ হাজার শিক্ষার্থীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো আবাসিক হল নেই। খোদ রাজধানীতে অবস্থিত একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই চিত্র যেকোনো শিক্ষানুরাগীকে পীড়িত করলেও এসব নিয়ে নীতিনির্ধারকদের মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। উদ্বেগের বিষয় হলো, কলেজকালীন জগন্নাথে যে কটি আবাসিক হল ছিল, সেসব অনেক আগেই বেদখল হয়ে গেছে। কয়েক বছর আগে শিক্ষার্থীরা যে আবাসিক হলটি উদ্ধারের জন্য আন্দোলন করছিলেন, সেখানে এখন সরকারি দলের একজন নেতা ও সাংসদের ১০ তলা ভবন শোভা পাচ্ছে। বুড়িগঙ্গার ওপারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের জন্য কিছু জমি কেনা হলেও সেখানে ভবন নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবার আন্দোলনে নেমেছেন। তাঁদের দাবি, পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল নির্মাণ করা হোক। মানববন্ধন ও সভা-সমাবেশের পাশাপাশি তাঁরা তিন দিন ধর্মঘট পালন করেছেন।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিলে পুলিশ বাধা দিলে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটান। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল নির্মাণের দাবিটি যৌক্তিক। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষকেরা তাঁদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন। কিন্তু দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ কিংবা ভাঙচুর কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। আর শিক্ষার্থীরা এও বলে দিতে পারেন না যে প্রস্তাবিত আবাসিক হল নির্দিষ্ট জায়গায়ই হতে হবে। আবাসিক হল পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারের জায়গায়, না অন্য কোথাও হবে—সেই সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলন তথা ধর্মঘটের কারণে ২০ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সামনে স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা। অতএব, শিক্ষার্থীদের ক্ষতির দিকটি সব পক্ষকেই বিবেচনায় নিতে হবে। যে জায়গায়ই হোক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলের ব্যবস্থা করা জরুরি। একই সঙ্গে বেদখল হওয়া হলগুলো উদ্ধারেও নেওয়া হোক কার্যকর পদক্ষেপ।

No comments

Powered by Blogger.