শেষ বছরে ওবামার লক্ষ্য

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা
হোয়াইট হাউসে নিজের শেষ বছরে পা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। কদিন বাদেই চূড়ান্ত ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণ দেবেন তিনি। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, কিউবায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করা ও ফৌজদারি বিচার-সংক্রান্ত আইনে সংস্কারের মতো বিষয়গুলো তাতে অগ্রাধিকার পাবে। ওবামার সামনে এখন লক্ষ্য একটাই; সেটা হলো, বাকি মেয়াদের পুরো সময়ে প্রাসঙ্গিক থাকা। স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ হলো মার্কিন কংগ্রেসের উভয় কক্ষের যৌথ অধিবেশনে প্রেসিডেন্টের দেওয়া ভাষণ। এমন ভাষণ বছরে একবার দিয়ে থাকেন প্রেসিডেন্ট। সে হিসাবে ১২ জানুয়ারি সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণ হবে ওবামার শেষ স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ। এমন এক সময়ে তিনি এই ভাষণ দিতে যাচ্ছেন, যখন হোয়াইট হাউসে তাঁর উত্তরসূরি হওয়ার জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচারণা নতুন মাত্রা পেয়েছে। হোয়াইট হাউসের সাবেক ও চলতি উপদেষ্টাদের মতে, ওবামা ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আন্তর্জাতিক চুক্তির মতো বড় কিছু সফলতার মাধ্যমে ‘অভাগা প্রেসিডেন্ট’-এর তকমা এড়িয়েছেন। আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে প্রতিপক্ষ শিবির রিপাবলিকান শিবিরে যে বিশৃঙ্খলাপূর্ণ অবস্থা, তা অব্যাহতভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন ওবামা। হোয়াইট হাউসের সাবেক উপদেষ্টা ড্যান পিফেইফার বলেন, ‘আমি মনে করি, ২০১৬ সালটা অনেক ক্ষেত্রেই ২০১৫ সালের মতো হবে। প্রেসিডেন্ট ওবামা ও তাঁর সহযোগীরা আগের মতোই গুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলো এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে যাবেন। আর রাজনৈতিক সার্কাসের আলোকপাতটা থাকবে প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ট্রাম্প ও অন্যদের ওপর।’ উপদেষ্টারা বলছেন,
ওবামার ১২ জানুয়ারির চূড়ান্ত ভাষণে অতীতের মতো আইনগত পদক্ষেপের লম্বা ফর্দ থাকবে না বলে তাঁদের ধারণা। এর পরিবর্তে ভাষণে জলবায়ু পরিবর্তন ও কিউবা নীতির মতো অগ্রাধিকারভিত্তিক বিষয়গুলোতে জোর দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি ওবামা নিজের শেষ দিনগুলোতে যেসব নীতির চূড়ান্ত পরিণতি দেখতে চান, তার ওপর আলোকপাত করবেন। এর বাইরে দেশে একের পর এক সহিংস ঘটনার প্রেক্ষাপটে তিনি অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে নতুন করে আহ্বান জানাবেন। কংগ্রেসের উভয় কক্ষ রিপাবলিকানদের দখলে থাকায় ওবামা অতীতে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নিতে পারেননি। তবে শিগগিরই নতুন ঘোষণা আসার ইঙ্গিত দিয়ে ওবামা বলেছেন, আগামী সোমবার তিনি এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে বসবেন। দপ্তর ছাড়ার আগেই ওবামা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারেন—কিউবার গুয়ানতানামো বের মার্কিন সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করা। এ বিষয়ে একটি সংশোধিত পরিকল্পনা শিগগিরই কংগ্রেসে তুলতে পারে হোয়াইট হাউস। তবে ওই পরিকল্পনার বিরোধিতা করা থেকে আইনপ্রণেতারা সরে আসবেন বলে মনে করছেন না ওবামার সহযোগীরা। গুয়ানতানামো বে ঘাঁটির বিষয়ে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহারের বিষয়টি এখনো হোয়াইট হাউসে প্রকাশ্য আলোচনায় নেই। তবে ওবামার সহযোগীরা বলছেন, এ বছর শেষ হওয়ার আগেই ওবামা সেই লড়াইয়ে নামবেন, তা সন্দেহাতীত। সাবেক উপদেষ্টা এবং ২০০৮ ও ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ওবামার সেনাপতিদের একজন ডেভিড অ্যাক্সেলর্ড বলেন, প্রেসিডেন্টরা সব সময়ই প্রাসঙ্গিক থাকেন। আর বর্তমান প্রেসিডেন্ট তাঁর সামনে থাকা বড় চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সব আইনগত কর্তৃত্ব ব্যবহারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে মনে হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.