সব মামলায় জামিন পেলেন অনুপ চেটিয়া

 বহুল আলোচিত, ভারতের চোখে দুর্ধর্ষ রাষ্ট্রবিরোধী অনুপ চেটিয়া অবশেষে সবগুলো মামলায় জামিন পেলেন। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে চারটি মামলা রয়েছে। বুধবার তিনি এর সর্বশেষ মামলাটি থেকে জামিন পেয়েছেন। এর আগে জামিন পেয়েছেন তিনটি মামলায়। ফলে তার এখন জামিনে মুক্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু তার জামিনের খবর পাওয়া গেলেও তিনি মুক্তি পেয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায় নি। তবে তার হাস্যোজ্বল একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, উপস্থিত সমর্থক, নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি হাত উপরে তুলে অভিনন্দনের জবাব দিচ্ছেন। তার সামনেই একটি গাড়ি। তিনি সেখান থেকে কোথায় গেছেন সে বিষয়ে কোন ইঙ্গিত দেয়া হয় নি রিপোর্টে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এএনআই। গত মাসে অনুপ চেটিয়াকে বাংলাদেশ থেকে ভারতের হাতে তুলে দেয়া হয়। ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট ফর আসাম (উলফা)-এর এই নেতাকে পেতে ভারত এতদিন ভীষণ তৎপর ছিল। বাংলাদেশ থেকে অনেকটা সতর্কতার সঙ্গে গত মাসে তাকে ভারতের হাতে তুলে দেয়া হয়। সেখান থেকে গোয়াহাটি কেন্দ্রীয় কারাগার হয় তার ঠাঁই। সেখানে একে একে তিনটি মামলায় তিনি জামিন পাওয়ার পর বুধবার তাকে সর্বশেষ মামলায় জামিন দেয় গোয়াহাটির সেশন জজ আদালত। সিনিয়র একজন আইনজীবী বলেছেন, জামিনের ক্ষেত্রে আদালত অনুপ চেটিয়াকে দুটি শর্ত দিয়েছেন। তা হলো তিনি মামলার তদন্তে কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারবেন না। পূর্বানুমতি ছাড়া তিনি স্পেশাল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিচার থেকে দূরে থাকতে পারবেন না। আসাম রাজ্য সরকার তার সব মামলার জামিনে অনাপত্তি জানানোর পর এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর অর্থ আসামে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে পরিচিত উলফাকে শান্তি আলোচনার টেবিলে আনা। সরকার উলফার সঙ্গে বিরোধ মিটিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে যেতে চাইছে। সেই শান্তি সংলাপে অনুপ চেটিয়া গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি মুক্তি পাবার পরই এই সংলাপ শুরু হতে পারে। বলা হয়েছে, আসামের বিদ্রোহী গোষ্ঠী উলফার অতীত ভুলের জন্য ক্ষমা করে দিতে বলেছেন অনুপ চেটিয়া। তিনি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনার পক্ষেও। তাই তিনি তার ও তার দলের সব ভুল ক্ষমা করে দেয়ার দাবি করেছেন। অনুপ চেটিয়া উলফার সাধারণ সম্পাদক। তারা আসামকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে এতদিন আন্দোলন করেছেন। সে আন্দোলন করতে গিয়ে তাদেরকে যেতে হয়েছে আন্ডারগ্রাউন্ডে। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি অনুপ্রবেশের দায়ে বাংলাদেশে আটক হয়ে জেল খেটেছেন। বাংলাদেশ থেকে তাকে ফেরত পাঠানোর পর তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইয়ের হেফাজতে। ১৭ই নভেম্বর তাকে গোয়াহাটি নিয়ে যায় সিবিআই। সেকানে তাকে ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন করা হয়। কড়া নিরাপত্তা হেফাজতে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে তোলা হয়। তার বিরুদ্ধে ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে বাংলাদেশে প্রবেশ, ৬টি দেশের অবৈধ অর্থ কাছে রাখা ও অবৈধ অস্ত্র কাছে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন মামলায় আসাম পুলিশের ওয়ান্ডেট তালিকাভুক্ত আসামী। অনুপ চেটিয়াকে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে আটক করা হয়। তারপর জেল খাটার পর গত ১১ই নভেম্বর তাকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.