জাতীয় ঈদগাহ প্রস্তুত, বৃষ্টিতেও সমস্যা নেই by কমল জোহা খান

আজ সকালে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ার সময়ও চলেছে
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাতের
প্রস্তুতির কাজ। ছবি: কমল জোহা খান
‘বৃষ্টি হওয়ায় ভালোই হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি থেকে পানি ছিটিয়ে চেক করা লাগবে না।’
আজ বুধবার সকালে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের প্রস্তুতির কাজ তদারক করার সময় সহকর্মীদের এ কথা বলেন পেয়ারু সর্দার অ্যান্ড সন্সের ব্যবস্থাপক মোজাম্মেল হক। ঈদের প্রধান জামাতের জন্য জাতীয় ঈদগাহ মাঠের প্রস্তুতির দায়িত্ব পেয়েছে পুরান ঢাকার এই ডেকোরেটর। দরপত্রের মাধ্যমে ৬৮ লাখ টাকায় এই কাজটি তারা পেয়েছে। তাদের দাবি, বৃষ্টি মহাবিপর্যয়ে রূপ না নিলে এক লাখ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন।
ঈদের দিন সকাল সাড়ে আটটায় এই প্রধান জামাতে ইমামতি করবেন চট্টগ্রামের জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা জালালুদ্দিন আল কাদেরী।
যেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে: ২৯ জুন থেকে ঈদগাহের বিশাল মাঠের প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ১২০ জন শ্রমিক দিনরাত কাজ করে প্রস্তুতি শেষ করে এনেছেন বলে জানান মোজাম্মেল হক।
প্রথমে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে বালু ফেলে মাঠটি সমান করা হয়েছে। এর পর বাঁশ বসানোর পর্ব শুরু হয়। ঈদগাহ মাঠের দুই লাখ ৬৯ হাজার বর্গফুট জায়গায় ৪৩ হাজার ছোট-বড় আকারের বাঁশ দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। এর সঙ্গে রয়েছে লোহার পাইপ ও গজারি কাঠ। তার পর এক হাজার ৬০০ পিস ত্রিপল দিয়ে মাঠটি ঢেকে দেওয়া হয়। প্রতি পিস ত্রিপলের আকার প্রায় ৪৩০ বর্গফুট।
মাঠ ঢেকে ফেলার পর এখন চলছে কার্পেট, বাতি ও ফ্যান বসানোর কাজ। এবার গরমের কথা চিন্তা করে ঈদগাহ ময়দানে ফ্যানের সংখ্যা গতবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে। মোজাম্মেল হক জানান, গত বছর সিলিং ও স্ট্যান্ড ফ্যান ছিল ৪৬৪ টি। এবার প্রায় ৮০০ ফ্যান রাখা হবে। এর মধ্যে ভিআইপিদের জন্য ১০০টি স্ট্যান্ড ফ্যান বসানো হবে। রাষ্ট্রপতির নামাজ আদায় করার স্থানে একটি কুলিং মেশিনও বসানো হবে। ভিআইপিদের জন্য ১১ হাজার বর্গফুট জায়গায় লালগালিচা ও কার্পেট বিছানো হবে।
সাধারণ মানুষ যেখানে নামাজ পড়বেন, সেখানে ত্রিপল, ম্যাট ও চাদর বিছানো হবে।
আকাশ অন্ধকার থাকলেও আলোর অভাব হবে না ঈদগাহ ময়দানে। ৫০০টি টিউব লাইট, ৭৪টি হ্যালোজেন ও ধাতব বাতি থাকবে। ছোট আকারের ৬৪টি ফ্লাড লাইট বসানো হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড একটি ৫০০ কিলোওয়াটের জেনারেটরের মাধ্যমে বিকল্প ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।
ঈদগাহ মাঠে পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ শৌচাগার ও ১৪০টি অজুখানা স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে নারীদের জন ৵ ৩৫টি অজুখানা রয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এক লাখ মসুল্লির মধ্যে পাঁচ হাজার নারীর জন্য আলাদাভাবে নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ২৯ রোজা, অর্থাৎ, ১৭ জুলাই চূড়ান্ত পরীক্ষা করা হবে ঈদগাহ ময়দান। এর আগে পুলিশ-র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে।

No comments

Powered by Blogger.