ভারত চীনের পুনরুত্থান একবিংশ শতাব্দীর মাইলফলক

ভারত-চীনের সম্পর্কোন্নয়নে পরস্পরকে প্রতিশ্র“তি দিলেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তিনদিনের বেইজিং সফরে দুই দেশের আস্থা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারে গুরুত্বারোপ করা হয়। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কের নজির হিসেবে সই হয়েছে ১০০০ কোটি ডলারের ২৪টি চুক্তি। অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার জন্য ১০ বিলিয়ন ডলারের এসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর মোদি বলেন, দু’দেশের মধ্যে একাধিক বিতর্কিত বিষয় থাকলেও এ চুক্তি আগামী দিনে সুসম্পর্ক তৈরি করবে ভারত-চীনের। অন্যান্য চুক্তির মধ্যে রেলওয়ে, খনিজ ও খনি খাত, মহাশূন্য, পর্যটন, বাণিজ্য, কারিগরি শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া উভয় দেশ অতিরিক্ত কনস্যুলেট জেনারেল ও চীন-ভারত থিঙ্ক ট্যাংক ফোরাম প্রতিষ্ঠার চুক্তিও করেছে। এ বছরটা চীনে ‘ইয়ার অব ইন্ডিয়া’ হিসেবে চিহ্নিত। আগামী বছরটাকে ভারতে চিহ্নিত করা হবে ‘ইয়ার অব চায়না’ হিসেবে।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর শুক্রবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘ভারত ও চীনের পুনরুত্থান একবিংশ শতাব্দীর এক মাইলফলক। দুই দেশের এ সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে আমাদের ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজার রাখতে সব ধরনের প্রচেষ্টা গ্রহণের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা আমরা পুনর্ব্যক্ত করেছি। একে অপরের স্বার্থের প্রতি আমাদের সংবেদনশীল হতে হবে।’ মোদি বলেন, ‘আমরা কিছু প্রাদেশিক সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেছি। পারস্পরিক বিশ্বাস আরও শক্তিশালী করা এবং সতর্কতার সঙ্গে আমাদের মধ্যকার সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।’
দুই দেশের অংশীদারিত্বের পূর্ণাঙ্গ সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপদান করা থেকে উভয় দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে এমন কিছু বিষয়ে চীনের কৌশল পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেছেন।
মোদি আরও বলেন, ‘আমি ভিসা নীতি ও আন্তঃসীমান্ত নদী সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি কামনা করেছি এবং আমদের আঞ্চলিক কিছু উদ্বেগের বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমি সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সব প্রচেষ্টা গ্রহণে আমাদের শক্তিশালী অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছি।’
চীনাদের জন্য ই-ভিসার ঘোষণা মোদির : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার তিন দিনব্যাপী চীন সফরের দ্বিতীয় দিনে চীনা নাগরিকদের জন্য ইলেকট্রনিক বা ই-ভিসা চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন। মোদি শুক্রবার বিকালে বেইজিংয়ে সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বক্তৃতাকালে এ ঘোষণা দেন।
বক্তৃতায় নরেন্দ্র মোদি বলেন, ভারতীয়রা আগামী প্রজন্মের অবকাঠামো প্রকল্পে বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করছে। তিনি বলেন, ভারত বীমা খাতে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.