চার সিটি নির্বাচনে ১১২ গিন্নি মাঠে by মাজেদুল নয়ন

বাংলায় বধূ শব্দের প্রতিশব্দ স্ত্রী, পত্নী, অর্ধাঙ্গিনী, দার, জায়া, গৃহিণী, গিন্নি। আর বাংলার এই বধূ আর গিন্নিরাও এবার জমজমাট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আসন্ন চারটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে।
তাদের বেশিরভাগ লড়বেন সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর পদে। সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদেও লড়বেন নারী-পুরুষ সবাইকে মাঠে রেখে। চারটি সিটি নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে মোট নারী প্রার্থীর সংখ্যা ১৯৩ জন। এর মধ্যে ১১২ জনই গৃহিণী।

রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা প্রার্থীদের হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য প্রকাশ করেছে নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্যে নাগরিক (সুজন)।

গিন্নিরা এগিয়ে রাজশাহীতে
রাজশাহী সিটি নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনে নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৬৬ জন প্রার্থীর মধ্যে গিন্নি ৪১ জন। সাধারণ ওয়ার্ডেও লড়াই করবেন এক গিন্নি। এখানকার নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে পেশা হিসেবে গৃহিণীর পরই রয়েছে ব্যবসা। নারী ব্যবসায়ীর সংখ্যা আটজন।

রাজশাহীতে এসএসসি পাশ করতে পারেননি ৩৭ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী।

অন্য সিটিগুলোর তুলনায় রাজশাহীর নারী প্রার্থীরা মামলাতেও এগিয়ে। পাঁচজন প্রার্থী বর্তমানে মামলা মাথায় নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। একজনের বিরুদ্ধে অতীতে মামলা ছিল।

মামলার মতো সম্পদেও এগিয়ে এখানকার নারীরা। নারী কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ৫২ জনের সম্পদ পাঁচ লাখ টাকার নিচে হলেও দশজনের সম্পদের হিসাব এর উপরে।

সিলেটের ২৩ গিন্নি
সিলেট সিটি নির্বাচনে নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের হলফনামায় ৩৫ জনের ২৩ জনই পেশা গৃহিণী উল্লেখ করেছেন। এরপর অন্যান্য পেশায় রয়েছে ছয়জন, আইনজীবি তিনজন আর ব্যবসায়ী একজন। তবে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে সিলেটের নারী প্রার্থী নেই।

এখানকার নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের ৩৫ জনের মধ্যে ২৩ জনই এসএসসি পাশ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন তিনজন।

মামলা রয়েছে শুধু একজন নারী প্রার্থীর বিরুদ্ধে।

হলফনামায় এসব প্রার্থীদের ২৭ জনের সম্পদ পাঁচ লাখ টাকার নিচে হলেও তিনজন রয়েছেন যাদের সম্পদের পরিমাণ ২৫ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকার মধ্যে।

খুলনায় গিন্নির পরে ব্যবসায়ী
খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নারী কাউন্সিলর পদে গৃহিণী পেশার নারীর সংখ্যা ২২ জন। ৪৫ প্রার্থীর মধ্যে দশজনের পেশার উল্লেখ নেই। ব্যবসা করছেন সাত নারী, চারজন চাকরিজীবী, একজন আইনজীবীও রয়েছেন। আবার ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদেও নারী-পুরুষের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে লড়বেন এক গিন্নি।

কিন্তু নারী কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ৪৫ জনের ২১ জনই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় এসএসসি ছুঁতে পারেননি। স্নাতক পাশ প্রার্থী রয়েছেন ১১ জন।

অতীতে মামলা ছিল এমন প্রার্থী না থাকলেও তিন নারী প্রার্থী এখন মামলা বয়ে বেড়াচ্ছেন।

আর্থিকভাবে সিলেটের তুলনায় পিছিয়ে আছেন খুলনার গিন্নিরা। মাত্র একজনের সম্পদের পরিমাণ পাঁচ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা। অন্য ৪৪ জনের সম্পদই পাঁচ লাখের নিচে।

বরিশালের ২৬ গিন্নি
আসন্ন বরিশাল সিটি নির্বাচনে নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে লড়ছেন মোট ৪৭ প্রার্থী। এসব প্রার্থীর মধ্যে ২৪ জনই পেশায় গিন্নি। আর সাধারণ ওয়ার্ডের নির্বাচনে লড়াই করবেন আরও দুই গিন্নি। সব মিলিয়ে ২৬ জন গিন্নি রয়েছেন নির্বাচনের মাঠে।

গৃহিণীর পরই ১২ জন অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত এবং চারজন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। স্নাতক পাশ রয়েছেন দশজন, বাকিরা এসএসসি পাশ করতে পারেননি।

নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের তিনজনের বিরুদ্ধেই বর্তমানে মামলা রয়েছে। অতীতে মামলা ছিল দু’জনের বিরুদ্ধে। ৪৭ নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে একজনের সম্পদ ১৫ লাখ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকা হলেও অন্যদের সম্পদ ৫ লাখের নিচে।

No comments

Powered by Blogger.