রাশিয়া থেকে শুধু খাদ্য চান কিম?

ত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং ইলের রাশিয়া সফরের লক্ষ্য কী—দেশটির ব্যাপারে কৌতূহলী অনেকেরই এখন এ প্রশ্ন। কাউকে কিছু জানার সুযোগ না দিয়ে গত শনিবার হুট করে সাঁজোয়া ট্রেনে করে মস্কো গিয়ে হাজির কিম।
গত নয় বছরের মধ্যে সে দেশে এটাই তাঁর প্রথম সফর। তবে সফরের লক্ষ্য ও বিষয় নিয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি। উত্তর কোরিয়া এখন অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। এসব সমস্যা সমাধানেই তিনি এ সফর করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি চীন সফর করেন কিম। গত এক বছরের মধ্যে সে দেশে এটি ছিল তাঁর তৃতীয় সফর। ওই সফরের তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে তিনি রাশিয়া সফরে গেলেন। টানা ১৭ বছরের শাসনামলে এমন ব্যস্ততার সঙ্গে বিদেশ সফর করেননি তিনি।
রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকার জন্য চীন ও রাশিয়ার কাছে ঋণী উত্তর কোরিয়া। কয়েক দশক ধরে পিইংইয়ংয়ের প্রধান মিত্র হিসেবে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে মস্কো। নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর তারাই মূলত উত্তর কোরিয়াকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে এসেছে।
পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিশ্বের ক্ষমতাশালী প্রায় সব দেশের সঙ্গে এখন উত্তর কোরিয়ার বৈরিতা চলছে। সে ক্ষেত্রে মিত্র দেশ চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে তাদের সম্পর্কন্নোয়ন জরুরি। বর্ষীয়ান নেতা কিম শিগগির ছোট ছেলে জং উনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। এ জন্য তিনি চীন ও রাশিয়ার জোরালো সমর্থন চান বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
রাশিয়া সফরে প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভের সঙ্গে কিমের বৈঠকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে ছয় জাতি আলোচনার বিষয়টি স্থান পেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, জাপান, দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে এই আলোচনা একসময় খুব জোরেশোরে শুরু হলেও দুই বছর আগে এতে অচলাবস্থা দেখা দেয়। কোরীয় সীমান্তে সম্প্রতি দুই দেশের সেনা ও সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে ইদানীং প্রায়ই উত্তেজনা দেখা দিচ্ছে। পীতসাগরে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বারবার যৌথ সামরিক মহড়া নিয়েও উদ্বেগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। এ পরিস্থিতিতে তারা চাইবে চীন ও রাশিয়া আবার শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করুক।
রাশিয়ার কাছে আরও যে দুটি জিনিস কিমের খুব করে চাওয়ার রয়েছে, তা হচ্ছে খাদ্য ও জ্বালানি সহায়তা। খরা ও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে ভালো শস্য হয়নি উত্তর কোরিয়ায়। বিদেশি খাদ্য সহায়তাও নিষেধাজ্ঞার বিধিনিষেধে আটকে পড়েছে। এতে সে দেশে এখন চরম খাদ্য সংকট বিরাজ করছে। এ সংকট থেকে উত্তরণে কিম বড় ধরনের খাদ্য সহায়তা চাইতে পারেন মেদভেদেভের কাছে।

No comments

Powered by Blogger.