এনটিসির সামনে চ্যালেঞ্জ অনেক

লিবিয়ায় মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। চার দশকের বেশি সময় ধরে কঠোরভাবে লিবিয়া শাসন করেছেন তিনি। তাই এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তাঁর পতনের পর লিবিয়ার পরিস্থিতি কী হবে? কী হবে বিদ্রোহীদের গঠিত ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিলের (এনটিসি) অবস্থান?
গাদ্দাফির পতনের পর এনটিসির প্রধানকে যে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে তা হলো: লিবিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যুদ্ধের ফলে ধ্বংস হয়ে যাওয়া অবকাঠামো পুনর্গঠন ও রাজনীতিকে পরিবর্তিত পর্যায়ে উত্তরণ। আর যারা স্বৈরশাসন হটাতে নিজেদের সবকিছু উৎসর্গ করছে, তাদের প্রত্যাশা পূরণ করা।
গত ফেব্রুয়ারিতে গাদ্দাফিবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর বিদ্রোহীদের অনেক কার্যক্রম ছিল বেশ গোছানো। এনটিসি গঠন করা, স্থানীয়ভাবে বিপ্লবী দল গড়ে তোলা—দারুণ সমন্বিতভাবে এবং নিয়মের মধ্য থেকে এসব করা হয়েছে। আবার এর উল্টো পিঠও দেখা গেছে।
কয়েক সপ্তাহ আগে বিদ্রোহীদের মধ্যে মতবিরোধের কারণেই তাদের সামরিক শাখার নেতা জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ ইউনিসকে হত্যা করা হয়। অবশ্য তাঁকে হত্যার কারণ এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।
এ ছাড়া গাদ্দাফিবিরোধী যুদ্ধে বিভিন্ন উপজাতি জনগোষ্ঠী জড়িত রয়েছে। স্থানীয় ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর স্পর্শকাতর বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সমন্বিত একটি কৌশল প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটা করতে হবে স্থানীয় বিপ্লবী ও জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির মাধ্যমে।
মিসর বা তিউনিসিয়ার মতো উন্নত দেশ লিবিয়া নয়। তাই সব মিলিয়ে লিবিয়ার নতুন কোনো নেতা অদূর ভবিষ্যতে আঞ্চলিকভাবে কোনো ভূমিকা পালন করতে পারবেন না।
গাদ্দাফিকে কোণঠাসা করতে লিবিয়ায় সামরিক জোট ন্যাটোর হামলা অবশ্যই বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সহায়তা করেছে। আবার মিসর বা তিউনিসিয়ার মতোই লিবিয়াতেও জনগণ বিদ্রোহীদের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে। বিদ্রোহীরা প্রথমেই জনগণের হূদয় জয় করে নিয়েছে।
লিবিয়ায় এই ‘সাফল্যে’র পর যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্সসহ পাশ্চাত্য শক্তি কোন দিকে যাবে? ইয়েমেন ও সিরিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। এর মধ্যে সিরিয়া অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রিটেন ও ফ্রান্সের প্রয়োজন এই দেশটিকে সামরিক অভিযানমুক্ত রাখা।

No comments

Powered by Blogger.