থাইল্যান্ডের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হলেন ইংলাক

থাইল্যান্ডের আইনপ্রণেতারা গতকাল শুক্রবার ইংলাক সিনাওয়াত্রাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন। তিনি হলেন দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী।
ইংলাক সিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বোন। গত মাসের জাতীয় নির্বাচনে পুয়ে থাই পার্টি তাঁর নেতৃত্বে বিশাল জয় পায়। পুয়ে থাই অন্য পাঁচটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট গঠন করে নির্বাচনে অংশ নেয়। ৫০০ আসনের পার্লামেন্টে এ জোটের আসনসংখ্যা ৩০০টি।
২৯৬ জন আইনপ্রণেতা ইংলাক সিনাওয়াত্রার পক্ষে ভোট দেন। আর বিপক্ষে ভোট দেন তিনজন। ১৯৭ জন আইনপ্রণেতা ভোটাভুটির সময় পার্লামেন্টে অনুপস্থিত ছিলেন।
৪৪ বছর বয়সী ইংলাককে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।
২০০৬ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন ইংলাকের ভাই থাকসিন সিনাওয়াত্রা। এর পর থেকেই দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চলে আসছে। নানা জনহিতকর কাজের জন্য গ্রামীণ ও শহুরে দরিদ্র মানুষের কাছে দারুণ জনপ্রিয় থাকসিন।
থাকসিন সিনাওয়াত্রা এখন দুবাইয়ে নির্বাসনে আছেন। কার্যত তাঁকেই পুয়ে থাই পার্টির নেতা হিসেবে মনে করা হয়। তবে দলটির দাবি থাকসিনের ভূমিকা পুরোপুরি পরামর্শকের।
থাকসিন বোন ইংলাককে তাঁর ‘ক্লোন’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। থাকসিন বিদেশে থেকে দল নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে যে অভিযোগ রয়েছে, তা নাকচ করে দেন ইংলাক। ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে গতকাল ইংলাক বলেন, ‘না, আমি কারও সঙ্গে কথা বলছি না।’
রাজনীতিতে নবীন ইংলাক বলেন, তাঁর ‘প্রথম জরুরি কাজ হলো কীভাবে বিভেদ নিরসনে জাতীয় সমঝোতা অর্জন করা যায়।’
পার্লামেন্টে ভোটাভুটির পর ইংলাক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার কর্মকাণ্ড মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পেরেছে কি না বা তাঁদের আশাবাদ পূরণ করতে পেরেছে কি, পারেনি—তা জনগণই বিচার করবে।’
শুক্রবারের ভোটাভুটির আগে থাকসিন সিনাওয়াত্রার কয়েক শ ‘লালশার্ট’ সমর্থক পার্লামেন্টের বাইরে অবস্থান নেয়।
আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণের আগে রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে ইংলাককে।
ইংলাক হলেন থাইল্যান্ডের ২৮তম প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী আপিসিত ভেজ্জাজিওয়ার স্থলাভিষিক্ত হলেন।
ইংলাকের জন্ম ১৯৬৭ সালের ২১ জুন। নয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। ইংলাক চিয়াং মাই ইউনিভার্সিটি থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে লোকপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.